হত-দরিদ্রের সংসারে আমি খেতে বসলে,
মা, শেষ পাতে তুলে দেন--
বাবার জীর্ণ কঙ্কালের রাঁধা ঝোল!
ভাইয়ের মেধাবী মস্তিষ্কের টোকো চাটনি!
দিদির রক্তাক্ত যোনীর নেশালি সুরুয়া!
বোনের অনাবৃত স্তনের সুস্বাদু পায়েস!
ভাইপো-ভাইঝির চুরি করা শৈশব দিয়ে,
ধোকা ডালনা, পঞ্চপদের আহামরি পথ্য।
আমি যে বেকারত্বের ক্ষুধা নিয়ে--
পেট পুরে চেটেপুটে খাই সবুটুকু।
কখনো আমি ক্ষুধার্ত বাঘের মতো--
কখনো আমি ধুর্ত শৃগালের মতো।
কখনো আবার চিল শকুনের মতো--
আবার কখনো বন্য কুকুরের মতোই।
শিকারের আপেক্ষায় রাত জেগে থাকি।
পর্দার আড়ালে চলে পণ্যের নষ্টামি!
এতোকাল শুধু দর্শক থেকেছি আমি।
এইবার নাহয় রাঘব বোয়াল হবো--
শতশত পাপ গঙ্গার জলেই ধোবো।
হে প্রভু, দয়াময়, - সভ্য সমাজে--
বেকারত্বের এ কেমন স্বাদ দিলে?
চোখের জল যেন লবণ হয়!
বিষ হয়ে যায়, মাখা ভাত।
তবু, মা পাতেই তুলে দেন--
ঠাকুরদার অতৃপ্ত আত্মার ভাজা চচ্চড়ি।
ঠাকুরমার বয়সি চোখের ঠান্ডা জল।
কাকু-জেঠুর তাজা কলিজার বেগুন ভর্তা।
কাকি জেঠিদের পেস্তাচেরা ঠোঁটের ললিপপ।
আমিতো শুধু বেকারত্বের ক্ষুধা নিয়েই--
আরও বেশি পেট ভরে খাই।
রক্তের স্বাদ যে পেয়েছি বেশ!
এবার তোমার মানচিত্রই ছিঁড়ে খাবো!
অনেক খেয়েছো তুমি! এইবারে অমিও--
ছিঁড়ে খাবো শুকনো বিষাদের মাংসপিন্ড।
ধারালো দাঁতে কুচিকুচি টুকরো করে--
ছিঁড়ে খাবো সমাজের কালো ফুসফুস।
ছিঁড়ে খাবো মানুষের অতৃপ্ত কলিজা।
তোমাদের প্রিয়জন ও প্রয়োজন সবকিছু--
আমি বেকারত্বের ক্ষুধা পেট নিয়ে--
দেখো ঠিকই, মানচিত্র ছিঁড়ে খাবো।