চাতকের মতো তৃষ্ণা নিয়ে বসে আছি!
চড়াই হয়ে বড়াই করবার সাধ্যি নেই!
শকুনের দৃষ্টি দিয়ে দেখেছি তোমার সৃষ্টি!
তবুও পেঁচা চোখে আর ঘুম নেই!
তিনটে শালিক সেদিন ঝগড়া করেছিল খুব!
ডালে বসেই সব দেখেছিল পোষা বুলবুলি।
খাঁচার ময়না বায়না ধরে যেমন নিঃশ্চুপ!
এক লহমায় বদল হল খঞ্জনার ব্রজবুলি!
তীর্থের কাক হয়ে তবু জীবন চলছে!
শঙ্খচিল হয়ে উড়ে যাওয়ার সাধ্যি নেই।
বকা দিলে যে, লাল মুনিয়া হয়ে,
অভিমানে ঠোঁট ফোলাবো সে স্বপ্নও নেই।
বনমালী হয়ে রূপ বাহারে হেসে খেলে,
রামগাংরা হরিয়াল শুক শারি হয়তো পেলে!
বিষাদ ছায়ায় তাই কালিশ্যামা উড়িয়ে দিলে।
জংলি কাবাসী, তুমি আজ আকাশ নীলে!
পায়রা হবে তেমন কোনো নিশানা পাইনি!
বক ধার্মিক আমার পছন্দ তালিকায় নেই!
মাঝে মাঝে আমিও দেখি দুর্গা টুনটুনি!
পুঁচকে হ্যামিং দেখার ভাগ্য তো নেই!
বসন্ত যেন ওই কাঠময়ূরীর নৃত্য দ্যাখে--
খয়েরি হাঁড়িচাচা চেনা পাপিয়ার পাশে বসে,
মন মজিয়ে মদনটাক ভীমরাজকে চেঁচিয়ে ডাকে
একটা গাঙচিল আপন চিত্তে উড়ছে আকাশে!
দৈনের দায়ে সকাল সন্ধ্যে ঘুঘু ডাকছে!
এখন বেগুন পাতায় টুনটুনির দেখা নেই!
বন্দি খাঁচায় লাল টিয়ার মতন পুষেছে!
তিতির হয়ে পাহাড় দেখবার উপায় নেই!
অদূরে নীলকন্ঠ এলো ক্ষুদে ফুলঝুরিকে দেখে!
' খোকা হও, খোকা হও!' বেনেবউটি ডেকে!
সবুজ রাঙা লটকন জামরুল ডালে বসে,
বাশপাতির কান্না দেখেই মরছে হেসে হেসে!
আলতাপরি হবে সে, ভাগ্য যদি রাখে!
গেছো তুলিকা পাইনা খুঁজে কোনখানে থাকে?
দীঘি পাড়ে শামুক-খোল পাঁকেই চেয়ে থাকে!
ডুব সাঁতারে পানকৌড়ি উড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে!
চোখগেল ও বসন্তবৌরি শিমুল মগডালে চড়ে!
মধুমাখা কণ্ঠে তারস্বরে চেঁচিয়ে চিৎকার করে!
একটা মা মৌটুসি এলো লিচুগাছের ডালে--
ওরে বিহঙ্গ তুই আবার যাসনে চলে!
ফিঙের ডানায় তবু পালক গজিয়ে বাড়ছে!
বকের ঠোঁটে খুঁজে নেওয়ার অদম্য ইচ্ছে!
মাছরাঙার মতো শিকারি সেজে সময় স্রোতে,
বসন্তের কোকিল হয়ে ডেকে ওঠার নব-উদ্যমে,
বন মোরগের ওই লাল চিকন ঠোঁটে--
বুনোহাঁস হয়ে উড়ে যায় আকাশের বুকে!
ডোডোর মতোই বিলুপ্তির পথে আমিও হেঁটে--
দোয়েল শ্যামা ডাহুক উড়ছে উড়ুক মহাসুখে
বাবুই হয়ে আমিও বাসা বেঁধে চলি!
ধূসর মরুপথে উট হয়ে হেঁটে চলি।
ঈগল হওয়ার সাধ জাগলেও সাধ্যি নেই!
বাজেরা ছৌ-মেরে আজ সবটুকু ছিনিয়ে নেয়!
বন্ধু বন চড়ুই দু-একটা চোখে পড়ে বেশ!
ফটিক চাঁদা ঘুম ঘোরে নিয়েছে নিরুদ্দেশ।
ফিনিক্স হয়েই ধ্বংস স্তূপে জন্ম পেয়েছি--
মাছরাঙা তো চাইলে আমিও হতে পারি!