আমরা যমালয় থেকে বেশকিছু ধর্ষিতা নারী বলছি!
তোমরা কি শুনতে পাচ্ছো ? -- হ্যাঁ,,, হ্যাঁ,,, তোমরাই! -- তোমরা শুনতে পাচ্ছো আমাদের আর্তনাদ?
আরে মুর্খ, উন্মাদ, অসভ্য, নীচ, পাষণ্ড, বর্বর ভারতবাসী, আমরা তোমাদেরকেই তো বলছি!
বলছি শুনতে পাচ্ছো তো ? -- আমরা ধর্ষিত হয়েও কিন্তু প্রতিবাদ জানাচ্ছি! - হ্যাঁ,, হ্যাঁ প্রতিবাদ!
সর্বকালের বিচিত্র এক দেশ, -- আমাদের মাতৃভূমি ভারতবর্ষ!
আজীবন মানুষের কর্ম থেকে ধর্ম-ই এখানে বড় হয়েছে!
সেই সিপাহীবিদ্রোহে শুরু! -- আর তারপর এক এক করে কেটেছে একাত্তরটি স্বাধীন নববর্ষ!
তবুও নতুন প্রজন্মে ঘটেনি বিবর্তন! -- হিংস্রতা যেন মানুষের রক্তেই আজও মিশে রয়েছে!
যুগের সাথে পাল্লা দিয়ে, নিজেকে সভ্য গড়ে তোলার তাগিদে আজ,
নারী, পুরুষ, নির্বিশেষে সকল জাতিই এক মেকী সভ্য-সভ্য নগ্ন খেলায় মশগুল হয়েছে!
তাই সঙ সেজে আধুনিকা নারী যখন তোমরা মডার্ন পোশাকে লুকিয়েছো দেহের লাজ!
হিংস্র, কাপুরুষ, পুরুষের দল তখন লোলুপ দৃষ্টিতে আড়চোখে চেয়ে খুঁজে চলেছে,
নারী তোমাদের অনাবৃত স্তন, উরুতে সুপ্ত লাভার গুপ্ত কামুক কিছু ইশারাদের!
শুনেছো তো ? - "অনাদর একটা মস্ত বড় স্বাধীনতা!" -- সেখানে পোশাকের স্বাধীনতা তো নিমিত্তমাত্র!
আচ্ছা নারী, ওই নর পিশাচগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করো তো, - 'কী এমন দোষ ছিল আমাদের ?'
তবে কী এটাই দোষ ছিল আমাদের, -- খেলার ছলে ঘুরে বেড়ানো যত্রতত্র ?
বলনা গো ওদের, -- আমরা তো সবাই, এক এক সদ্য ফোঁটা কুঁড়ি!
আমরা কি আর আজব পৃথিবীর ধর্ম, বর্ণ, রাজনীতি আর কামুক সংযম বুঝি ?
বয়সের ঘরে আমরা তো, তিন থেকে আছি কুড়ি! -- থুড়ি আমরা তো বাবার চোখে ছিলাম এক একটা পাকা বুড়ি!
পুরুষ মাঝে তাই তো কাকু, দাদা, ভাই এসব ভেবেই আমরা সবাই ভালোবাসা-ই খুঁজি!
মুখের আড়ালে মুখোশ থাকে! অত কি করে বুঝি! -- বুঝলে মাগো কাটার দিয়ে কেটে নিতাম লিঙ্ক!
তখন পুরুষ বুঝতো মাগো, নারী জাতির মর্ম -- বুঝতো ওই ধর্ষকেরা তাদের অপকর্ম!
কা-পুরুষেরা ভাবে মাগো, নারী নাকি তাদের ভোগের পণ্য, -- আর তারাই নাকি এই সমাজের সিংহ!
ভুলেই গেছে মাগো, দুর্গা, রকেয়া, প্রীতির কথা! -- অসলে ওরা তো সবেই খোঁজে ধর্ম!
এই মহান ভারতেও আজ যারা অনিচ্ছাতে সংযম করে,
আর তারপর তোমাদের সাজানো রাজনীতির মারপ্যাঁচে ফেলে সংযমের আনন্দ লুটে নেয়!
অথচ, কিছু মেকী ধার্মিক আর বেশকিছু আধুনিকা নারী আজও তাদের-ই ফরে!
সভ্য সমাজ সব চেয়ে চেয়ে দেখে আর নীরবে হাততালি দেয়!
তখন কোথায় থাকেন, -- তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের আল্লাহ, তোমাদের গড, তোমাদের ভগবান ?
কি লাভ হয়েছে বলতো, -- ওই সব ঠুটো জগন্নাথগুলোকে অমৃত পান করিয়ে?
যদি তোমাদের আল্লাহ নাই পারে নারীর লজ্জা নিবারণ করে ওই পাষণ্ড ধর্ষকগুলোর নিতে প্রাণ!
তবে কি লাভ বলো আসিফার মতো শত শত নারীকে নামাজ, কলমা পড়িয়ে ?
মানুষ বড় আজব বস্তু! -- আর ধর্মের রাজনীতি তো তার চেয়েও বড় আশ্চর্যের!
রোজ তো দেখি আমাদের জন্য তোমরা মোমবাতি হাতে প্রতিবাদের মিছিল বের করো,
আর মিছিলে এক এক করে সামিল হয় মুখোশধারী ধর্ষকেরা! -- বলতো এটা আমাদের কছে কতটা কষ্টের?
কতটা যন্ত্রণার, কতটা লাঞ্ছনার.? -- আচ্ছা এমনটা ঠিক যদি তোমার আর তোমার পরিবারের সাথেই হয় ধরো!
তখনও কি পারবে হে আধুনিকা, হে মেকী ধার্মিক, হে ভীত ভারতবাসী চুপ থাকতে?
পারবে কি ওই মোমবাতির নিরব মিছিলে ধর্ষকে ভাবতে তোমার ভাই?
মেকী ধর্ম, আর রাজনীতির উর্দ্ধে না গিয়ে প্রতিবাদে গর্জে না উঠে, - পারবে নিজেকে স্থির রাখতে?
নাকি সমস্ত কিছুকে উপেক্ষা করে চিৎকার করে বলবে, " বিচার চাই! বিচার চাই! -- ধর্ষকের একটাই সাজা মৃত্যুদন্ড চাই!