৩) শ্লেষঃ একই শব্দ যখন একাধিক অর্থের প্রকাশ ঘটায় তখনকার অবস্থাকে বলা হয় শ্লেষ ।
তবে শ্লেষ বলতে আমি যা বুঝি তা হল , একটি শব্দ কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে ব্যবহৃত হবে এবং তার উপর ভিত্তি করে শব্দটির একাধিক অর্থ টানা সম্ভবপর হবে । উদাহরনটা এমন হতে পারে _
>>এক ব্যক্তি তার বন্ধুকে তাদের বাড়ির আশ্রিত ঘরজামাই সম্পর্কে প্রশ্ন করল - " কি ভাই আমাদের নতুন জামাইয়ের কি খবর ? "
তাতে উত্তর এলো - "কি আর বলবো , জেলে আছে !"
এখানে "জেলে আছে" শব্দটির একাধিক অর্থ হতে পারে । যেমনঃ লোকটি যেহেতু ঘরজামাই তাই এই ঘর তার কাছে জেল সরূপ , আবার সাধারন অর্থ দাড় করালে জেলখানাতে আছে । এটিই মূলত অর্থে শ্লেষ বোঝায় । মানে ব্যবহার হবে কোন কিছুর প্রক্ষিতে কিন্তু অর্থ বের হবে একাধিক ।
আবার ধরুন -
"এ পিরিতের নাম “বৃক্ষজ্বালা”,
যেখানে খনার বচন অতীত । "
এখানে "পিরিত" শব্দটি একাধিক অর্থ প্রকাশ করে । প্রথমত সাধারন অর্থে হতে পারে ভালবাসা , আবার কবিতার বিষয় বস্তু বিচারে এর অর্থ দাড়ায় "ঘটনা" । তার মানে এখানে "পিরিত" শব্দটির শ্লেষ অলঙ্কার ঘটেছে ।
৪) শ্লেষ বুঝেছেন তো !
তবে বেশ করেছেন । কারন বাবা বক্রোক্তি শ্লেষের বড়ভাই ।
শ্লেষ হয় শব্দে আর বক্রোক্তি ঘটে শব্দের আধারে মানে বাক্যে ।
অর্থাৎ , একটি পূর্ণ বাক্যই যখন একাধিক অর্থ প্রকাশ করে।
বক্রোক্তি -র ক্ষেত্রে আমি তেমন কোন প্রায়গিক উদাহরন পেলাম না , তাই আবার সুয়োগ মিলল নিজের ঢোল নিজে পেটাবার ।
তারুণ্যে প্রকাশিত আমার একটি রম্যগল্প "খানা - খন্দের সমাচার" থেকে একটা উদাহরন দিলাম __
"- ভাবি আজ যা রান্না করলেননা , উফ লা জাওয়াব !
ঘোমটার ভেরত থেকেই লজ্জা পেয়ে উত্তর দিল মোস্তাফিজের বৌ - তার মানে আমিন ভাই আমার রান্না অনেক খারাপ । "
এখানে "মোস্তাফিজের বৌ" ঠিকই বুঝেছে "লা জাওয়াব" বলতে তার বরবন্ধু "আমিন" কী বুঝিয়েছে , তারপরও "লা জাওয়াব" - টিকে তিনি জবাব না দেয়ার সামর্থ্য মাথায় রেখে তার উত্তরটি আরো কৌশলে দেন । এখানে এই "লা জাওয়াব" ধারী বাক্যটির বক্রোক্তি ঘটেছে ।
(চলবে)