২) যমকের আলোচনা করার আগে 'যমক' সম্পর্কে কিছু কথা বলে রাখা উত্তম ।
সাধারনত একই শব্দ যখন কবিতায় ব্যবহৃত হয় অথচ তাদের অর্থের পার্থক্য থাকে , তাই যমক ।
মানেটা সোজা শব্দ বার বার বসবে তবে অর্থ থাকবে আলাদা আলাদা । উদাহরন দেয়া যাকঃ

##কিছুটা মৃদু কিছুটা লতা##

তার বাড়ির নারকেল গাছে ,
কি অনেক অনেক ডাব ছিলো ?
সেই সুবাদে কী মৃদুর রসে !
ক্ষণে ক্ষণে সে হায় ডাবছিলো ।
হয়ত অনেক লতারা আছে ,
যারা তিলে তিলে কী পুরছিলো !
তাদেরই তিল যে গেল ধসে ,
ডাবের পাশে - কালো কাক ছিলো ।
কাকের ডিমের কুসুম আছে ,
কুসুমটা তখন কাঁদছিলো ।
তাই দেখে বুঝি বাড়ির পাশে ,
কুসুমটা ভীষণ কাঁদছিলো ।
এ কবিতায় খুব ছল আছে ,
সে ছলে অনেকটা ভাবছিলো ;
সেই ভাবেতে আজ মুদৃ ভাসে ,
সে লতাগুলো নিয়ে ভাব ছিলো ।
এখন কি আর লতারা আছে ?
কী পাঁপড়ি পাঁপড়ি চাপ ছিলো !
ফুলটা যে ভীষণ নষ্টে হাসে ,
গাছের গোড়াতে কি চাপছিলো ?
http://www.bangla-kobita.com/786/post20140625122917/

এ কবিতায় প্রথমদিকে 'ডাবছিলো' দু'বার এসেছে , অবশ্যই এরা অন্ত্যানুপ্রাসের উদাহরন অপরদিকে এখানে 'ডাবছিলো' এর অর্থ দুজায়গায় দু'রকম । যেমন দ্বিতীয় চরনে 'ডাব ছিলো' মানে কচি নারিকেল ছিল আবার চতুর্থ চরনে 'ডাবছিলো' মানে ডেবে যাচ্ছিল । অর্থাৎ এখানে এটা যমক অলঙ্কার হয়েছে এবং এটি অন্ত্যযমকের একটি উদাহরন ।

একই উদাহরন খেয়াল করুন , 'ভাবছিলো' , 'চাপছিল' ; কিন্তু কাঁদছিলো দু'জায়গায় একই অর্থ প্রকাশক , এটি এখানে অন্ত্যযমক নয় বরং অন্ত্যানুপ্রাস ।

আবার দেখুন , দশম এবং বারতম চরনে 'কুসুমটা' শব্দ দু'বার এসেছে । এখানে প্রথমে 'ডিমের কুসুম' এবং পরে 'একটি বালিকা' বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে , তাই এটি আদ‌্যযমকের উদাহরণ ।

(চলবে)