পুরাকালে দেবতাগন যজ্ঞ করিল
সেই যজ্ঞে যম পুরোহিত হইল,
কাটিল বহু বৎসর কাটিল বহু দিন
যম বিনা মনুষ্যকূল হইল মৃত্যুহীন।
উদ্বিগ্ন দেবতাগন গেল ব্রহ্ম দ্বারে
কহিল ব্রহ্মা আশ্বাস দিয়া যাও যজ্ঞ পারে।
গঙ্গার তীরে স্বর্ণপদ্ম দেখে যেতে যেতে
অভিগতে ইন্দ্র চায় নিকটে পেতে,
অনলপ্রভা রমনী ক্রন্দন করিছে,
তাঁহার অশ্রুবিন্দু পদ্ম হইয়া গঙ্গায় ঝরিছে।
জিজ্ঞাসিল ইন্দ্র,
‘ রমনী, কাঁদছ কেন মিছে?’
রমনী কহিল,
‘জানিতে চাও? তবে এসো মোর পিছে পিছে ।
দুজনারে, দ্রুত পায়ে চলিল সুদূরে
অগ্রসরে অধিরোহক হিমালয় শিখরে।
দেখে, সুদর্শন যুবা,মত্ত পাশা ক্রীড়ায়, যুবতীর সনে;
দ্বারে দেবরাজ ইন্দ্র, বসিয়া সিংহাসনে।
দেবরাজ ক্রুদ্ধ হইয়া দম্ভ দর্শাইল
হাস্য বদনে যুবা ইন্দ্র-পানে চাহিল।
‘অজ্ঞ যুবা! আমি দেবরাজ,’ ইন্দ্র কহিলেন
খণ্ডিতে দম্ভ যুবা স্বরূপ দর্শাইলেন
বজ্রধ্বনি, উজ্বলজ্যোতি, চারি ছড়িল,
ত্রিশূল হস্তে, ত্রিলোকেশ্বর প্রকট হইল।
ক্ষমা করো মহেশ্বর, হে বিশ্বপতি
জোড়হস্তে কহিলেন ইন্দ্র হইয়াছে মোর দুর্গতি।
মহাদেব হাসিয়া কহেন,
ত্রিলোকে-ত্রিজগতে তুমি দেবের রাজা!
দম্ভবশে অজ্ঞতায় লভিতে হবে সাজা।
বলশালী ইন্দ্রদেব পর্বততলে যায়;
বসে সেথা চারি ইন্দ্র মুক্তির অপেক্ষায়,
দম্ভে মগ্ন ক্ষমতাধারী হয় না দেবতা,
মহাকালের কোপে ইন্দ্র সইছে ব্যর্থতা।
পর্বততলে পঞ্চইন্দ্র বাস করিবে,
মর্ত্যলোকে শত্রু বধে স্বর্গে আসিবে।
পঞ্চইন্দ্র রনক্ষেত্রে যুদ্ধ সাধিবে
ইন্দ্রগন পান্ডবরূপে শত্রু বধিবে।।