কবিতা : শ্রেষ্ঠ এক কসাইয়ের শহরে।
কবি : অরণ্য মজিদ।
তারিখ : ১০ জানুয়ারি ২০১৫।
শ্রেষ্ঠ এক কসাইয়ের শহরে
বুকের ভেতরে আমি
জড়সড় এক শিশু
বড় ভয়ে ভয়ে
নিজেকে নিয়ে
নিজের ভেতরে হাঁটি।
এ শহরে এক সামর্থবান,
ক্ষমতাবান কসাই
জমকালো চাকচিক্যে
সুদর্শন ছুরি হাতে,
বাস করে বহুদিন ধরে।
এ শহরের নিয়মনীতি,রীতিনীতি
গড়া তাঁর নিজ হাতে
নিজ মতে।
যদি কোন নারী
না মানে তাঁর বিছানার চাষ,
যদি কারো হাত লম্বা হয়
তাঁর হাতের চেয়ে বেশি,
যদি কারো পা দ্রুত হয়
তাঁর চলার চেয়ে বেশি,
তাঁর ছোঁয়ার আগেই যদি কেউ ছুঁয়ে আসে ভালোলাগা,
যদি তাঁর ভোগের আগেই
পূর্ণ করে কেউ চাওয়া পাওয়া,
তবে এ কসাই দ্বায়িত্বের সাথে
ঐসব নারী, ঐসব পুরুষের
চোখ, হাত, পা, শরীর
ছোট, বড় থানে কেটে কেটে ঝোলায় তাঁর
শাস্তির লৌহদন্ড শিকে।
এ শহরে মৃতদের সামনে
বড় বেশি আওয়াজে কান্না নিষেধ।
মৃত্যুর কারণ-অকারণ,
এইসব হিসেব-নিকেশ
ঘুমায় চুপচাপ মৃতদের সাথে।
এ শহরে ঘাড়ের উপরে,
মাথার ঘোরাফেরা বড় বেশি নিষেধ।
অক্ষিকোটরে চোখের নড়াচড়া,
এদিক ওদিক চাওয়া পাওয়া
আরো বেশি নিষেধ।
জুতার বুকের ভেতর,
ছোট মাঠ ছেড়ে পায়ের হাঁটাহাঁটি
জোরালো নিষেধ।
এ শহরে কষ্টের দুঃখের ভাগাভাগি
শুধু নিজের সাথে নিজের।
হাততালি, করতালি
কথাদের জমায়েত
বরফ জমাট নিষেধ।
শ্রেষ্ঠ কসাইয়ের এ শহরে
বুকের ভেতরে জড়সড় এক শিশু আমি।
এ শহরে পরিবার-পরিচিতি
রাজপথ-রাজনীতি
তার-ই-আঙ্গুল ধরে করে হাঁটাহাঁটি,
ভালোলাগা, ভালো থাকা
সব কিছু আজ মৃতদের মতো
চেনে শুধু কবরের মাটি।