( আমার নিজের জীবন থেকে নেওয়া দু চার লাইন কথা )
অভাব ,
পুরোনো এক অন্ধকার অতীত।
সারাদিন দু মুঠো পান্তা ভাত,
রাতে একটা ডিম ভাজা - তিনটা মানুষ।
কোনো কোনো দিন পাতলা মুশরীর ডাল দিয়েই হয়ে যেত।
বাপের হাসি মাখা মুখটা
কবে দেখেছি মনে নাই।
সপ্তাহের পাঁচ টা দিনই ছিল কিস্তির দিন।
প্রতিটাদিন আমার মাকে বাঁচতে হতো যুদ্ধ করে।
কত মানুষের কত কথা ,
লজ্জায় মা মুখের ভেতরে কাপড় দিয়ে কাঁদতো প্রতিদিন।
খুব কাছ থেকে মায়ের শব্দহীন কান্নার
আকাশ ভাঙা চিৎকার শুনেছি।
ঘরের পেছনে
অবুঝ বালিকার মতো বসে থাকতো -
আমার সেই চঞ্চল বোন।
সুন্দর দুটি গাল বেয়ে টপ টপ করে বৃষ্টি হতো তার দুটি চোখে।
কখনো কোনো কিছুর আবদার করেনি।
অভাবের কারণে বোনের চিকিৎসা হয়নি।
একদিন স্কুল থেকে আসার পথে শুনি -
আমার সেই চঞ্চল বোনটা আর নেই।
কষ্ট ,
এখন আর তেমন দেখিনা।
মাঝে মাঝে পেছনে ফিরে যাই ,
খুব চেষ্টা করি অতীত ভুলে যেতে , পারি না।
চোখটা বন্ধ করলেই দেখি একটা খালি ঘর ,
তার মাঝে ঘুনে খাওয়া ছোট্ট একটা খাট তার উপর একটা মানুষ
অসহ্য পায়ের যন্ত্রনা নিয়ে দিন রাত এক করে ফেলা।
তার পাশে আমরা আরো দুটি মানুষ ,
আমরা দুই মা ছেলে।
সারাদিনের পরে যখন সন্ধ্যা হতো ,
তখন একটাই প্রার্থনা ছিল ,
হে আল্লাহ আমার বাপেরে তুমি একটু ধৈর্য্য দিও -
যাতে আমরা একটু ঘুমাতে পারি।
আমার বাপেরও একটাই প্রার্থনা ছিল -
হে আল্লাহ আমাকে তুমি উঠিয়ে নিয়ে যাও ,
যত সম্ভব তাড়াতাড়ি।
নিয়ে গেলো।
১২ বছরের একটা ছেলে , পুরো সংসারের চাপ ২ লক্ষ টাকা ঋণ।