গিন্নির জ্বালাতে,
ঘরে দেখি টেকা দায়।
ঘ্যানঘ্যান দিন রাত,
এই বুঝি ছেড়ে যায়।
কোকিলের কণ্ঠ তার,
নিয়ে গেছে বুঝি বৃকে।
তাই ভোর ঘুম ভাঙে রোজ,
কি ভীষণ কর্কশ চেঁচানিতে।
আমার যে গুণ কত,
রোজ তার বলা চাই।
সে গুণের তালিকাটা,
দিন দিন বেড়েই যায়।
একে একে বলি তবে,
পাঁচ কান কোর না।
গিন্নির কথা ছাড়া,
এক পাও নড়ো না।
বয়েসের সাথে দেখি,
গিন্নির বেড়ে চলে জৌলুস।
সোকেশে ভরা তার,
রকমারি যৌবন কার্তুজ।
তাই নিয়ে চলে দেখি,
তুলিতে মাখা মাখি।
মুখটাই ঢাকা পড়ে,
একে একে প্রলেপ রকমারি।
বয়েসের ছাপ ঢাকে,
ফুটে উঠে যুবতি।
বৌটাই চেনা দায়,
এটাই আমার কি?
আমাতেই ঠেলা তার,
সাথে নিয়ে চলা দায়।
উদরটা দিন দিন,
খাদ্যের মহড়ায় বাড়ছে।
মাথাটাও দিন দিন সাহারা,
যদিও জেগে ছিল দু-এক কেশেরা।
তারাও মায়া ত্যাগ করে দেখি
একে একে নিরুদ্বেশ।
রক্তটা দিন দিন,
মিষ্টির প্রেমে দেখি ডুবছে।
কি ভীষণ বেয়াদব মুখটা,
গিন্নির আড়ালে তবু সেই গিলছে।
খাবারের পাহাড়েতে আটকে,
এ করুন চোখ দেখে।
মাঝে সাঝে জুটে যায়,
গিন্নির দয়ার দান।
আমি খুঁজি ফাঁকতাল,
অনিয়মের সুখ টান।
যদিও বা থাকে ভয়,
সে সুখের উপভোগ কম নয়।
পোশাকের সাজ বাহারে,
আমি নাকি কি ভীষণ সেকেলে।
শৌখিন সাজে মোর,
প্রাণ করে হাঁসফাঁস।
গিন্নির সাফ কথা,
এভাবে চলবে না।
তাই রোজ রাত কাটে,
বরাদ্দ দুই খান রুটিতে।
ডাক্তার করা আছে মাইনে,
যদিও খুব এক যাইনে।
বেটা বড় বজ্জাত,
পাতা জুড়ে এটা না ওটা নার ফর্দ।
তারপর ভোর হলে,
রোজ একি তাণ্ডব।
ঘড়ি ধরে মাঠ জুড়ে,
বৃথা ভাঙার চেষ্টা চর্বির সঞ্চয়।
সাথে যেতে যেতে তাই,
গিন্নির দিকে আড় চোখে চাই।
চোখে চোখ পড়লেই,
করে ওঠে ঝনঝন।
অভিযোগ হলে শেষ,
পেতে বসে সংসার।
গিন্নির কড়া পাহারা,
আমাকে করে রাখে কুপকাত।
তাই বলে ভেবনা,
সে মোটে হাসে না।
প্রাণ খোলা হাসি তার,
সে হাসির স্রোতে হাসে মোর সংসার।