কভিড আতঙ্কে ঘরবন্দী বিচ্ছিন্নতার সূত্রে সবার ভেতরেই কমবেশি এক শূণ্যতার সৃষ্টি হয়েছিল। আতঙ্কের মাত্রা একটু একটু করে কমার পথ ধরায় প্রিয় পরিবেশে প্রিয় মানুষের সান্নিধ্য পেতে মনের ব্যাকুলতার যেন আর তর সইছিলো না। কবি ফারহাত আহমেদ এর আহ্বান পেতেই তাই শত ব্যস্ততার মাঝেও সময় বের করে কিছু কবি ছুটে এসেছিলেন ভালবাসার টানে। স্বল্প পরিসরে কবি আর কবিতায় এক মিষ্টি মধুর সন্ধ্যা কখন যে রাতে পরিণত হলো জানতে পারলো না কেউ।
১৮-৯-২০২১ খ্রিঃ তারিখ বিকেল পাঁচটায় গ্র্যান্ড প্রিন্স রেস্টুরেন্টের সাত তলায় একে একে হাজির হলেন, সর্বকবি হুমায়ূন কবীর, নায়ার সুলতানা লাবণী, আফরিনা নাজনীন মিলি, ফারহাত আহমেদ, মোজাম্মেল হোসেন এবং জাহিদ হোসেন রঞ্জু। কবি উত্তম চক্রবর্তী ব্যক্তিগত কাজে তার দেশের বাড়ীতে থাকায় তিনি অনুপস্থিত থেকেও আত্মিকভাবে উপস্থিত ছিলেন।
বাঙলা কবিতার আসরের প্রতি কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। এই আসরের কল্যাণেই আমরা কিছু সৌখিন কবি একত্রিত হতে পেরেছি এবং তারই সূত্র ধরে পরিণত হয়েছি আত্মার আত্মীয়তে। প্রায় এক বছর পরে দেখা প্রাণের মানুষগুলোর সাথে। সবার মধ্যে বাঁধ ভাঙা উচ্ছ্বাস। কুশল বিনিময়ের মাধ্যমে স্বল্প পরিসরে আসর শুরু হলেও আনন্দের মাত্রা কিন্তু অল্প ছিলো না। এই আসরে কবিতা লেখা ছাড়াও কবিগণের অজানা অনেক গুণের পরিচয় মেলে! সেগুলোর প্রদর্শণে উপস্থিত কবিগণের মধ্যে অনাবিল আনন্দের জোয়ার বয়ে যায়। বহুদিন পর প্রাণ খুলে হাসিতে মেতে ওঠেন সবাই। তারপর শুরু হয় স্বরচিত কবিতা পাঠ। কবিতা পাঠ এবং শোনার পাশাপাশি গঠনমূলক আলোচনা/সমালোচনায় আসর হয়ে উঠেছিল তাল ছন্দ আর অন্ত্যমিল শেখার এক পাঠশালা।
কবি মোজাম্মেল হোসেন কবিতা পাঠ দিয়ে আসর শুরুর পরে উপস্থিত কবিগণ একাধিক কবিতা পাঠের মধ্যে দিয়ে আসরকে জমিয়ে তোলেন। কবিতা পাঠের ফাঁকে ফাঁকে চলে পেটপূজার পর্ব। ঘড়ির কাঁটা কখন যে আমাদের নির্ধারিত সময় ছাড়িয়ে এগিয়ে গেছে সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই কারো। যখন খেয়াল হলো দেখি সময় বলছে, ওঠো এবার। বিদায়ের উদ্দেশ্যে উপস্থিত কবিগণ প্রস্তুতি নিতে শুরু করলেন।
আবার জমবে মেলা অন্য কোথাও অন্য কোনোখানে এই আশ্বাসে প্রাণের আসর ছেড়ে যার যার গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম সীমাহীন ভালো লাগার আবেশ নিয়ে।