১২-৯-২০২২ খ্রিঃ তারিখে কবি ফারহাত আহমেদ এর "কবি হতে চাও?" কবিতাটি পড়লাম। ইদানীং কবিতা পড়ার মতো সময় খুব কম পাই। একটু আধটু সময় যদিবা জোটে দু চারটে কবিতা পড়ার চেষ্টা করি কিন্তু মন্তব্য দেয়ার সাহস/ইচ্ছে হয় না। প্রথমেই বলি ইচ্ছে হয় না/সাহস হয় না এর কারণ। এই আসরে মূর্খ কবির তালিকা তৈরী করলে শতভাগ নিশ্চিত ১ নম্বর আসনটি হবে আমার। প্রশ্ন জাগতে পারেন তাহলে আসরে আছেন কেন এবং লিখেন কেন?
রাতের আঁধারে ঘোড়া ভেবে বাঘের পিঠে চড়ে বসা বালকের মতো আমার দশা। কোন কালেই কবিতাপ্রেমিক ছিলাম না আমি। কবিদের বিষয়েও আমার বিন্দুমাত্র আগ্রহ ছিলো না। ঘটনাচক্রে কিছু কবিতা পড়ার সুযোগ হয়। আর তারপর সেই পড়ার জেরেই কখন যে লিখতে শুরু করি! তারই সূত্র ধরে আসরে আগমন।
যাই লিখি কিছু অগ্রগামী কবি তাতে বাহবা যোগান, কখনো টুকটাক তাল ছন্দের পরামর্শ দেন। আমিও মহা উৎসাহে লিখতে থাকি। ধীরে ধীরে অক্ষরমাত্রা, স্বরবৃত্ত আরো কঠিন কঠিন বিষয়েও আলোচনা শুনতে পাই বিভিন্ন জনার কাছে। সেগুলো আমার মতো মূর্খের জন্যে অত্যন্ত দুর্বোধ্য। ধীরে ধীরে নিজের মূর্খতা স্পষ্ট হয়ে উঠলো আমার কাছে। এখন লিখতে গেলে ভয় তৈরী হয় নিজের মধ্যে। তারপরো আগের মতো না হলেও অনেক দিন পর পর কবিতা লিখি। কারণ আমার লিখতে খুব ইচ্ছে করে। কিন্তু কারো কবিতায় মন্তব্য দিতে ইচ্ছে হয় না। যে বিষয়ে আমার স্পষ্ট জ্ঞান নেই সে বিষয়ে শুধুমাত্র বাহ!, চমৎকার, অসাধারণ জাতীয় এক কথার মন্তব্য দেয়া মানে আত্মপ্রতারণা বলে আমার মনে হয়।
কবি হতে চাও?
নিয়মের বেড়ে,
আগে ডানাদুটো,
ঠিক মত বেঁধে যাও।
যদি ভেবে থাকো,
এরকম কেন,
কবি কম, বেশি কেরানী?
সৃষ্টিশীলতা,
পা চাটায় শুধু,
পটের রাজা বা রাণী।
অনুদার মন,
ইতর ভাষার,
প্রশ্রয়ে তিলে তাল যার,
তাদের আসরে,
তোমার যাওয়ার,
আর নাই কোন দরকার।
“কবি হতে চাও” কবিতায় যেন আমার মূর্খতাকেই আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন কবি। কিন্তু শেষে যখন তিনি লিখলেন-
ঐসব ভুলে যাও।
"সৃষ্টিসুখের উল্লাসে" ডানা,
হাওয়ায় উড়তে দাও।
তখন আমার খুব লিখতে ইচ্ছে করা যেন স্বীকৃতি পেলো। আমার একটাই প্রশ্ন ব্যাকরণ না মানলে কি কবিতা লেখা যাবে না? কবি কাজী নজরুল ইসলাম, কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কি কবিতা লেখার আগে ব্যাকরণ শিখেছিলেন? ধৃষ্টতার জন্যে আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। কিন্তু কেন জানি মূর্খের মাথায় এই চিন্তা মাঝে মাঝেই ঘুরপাক খায়।