ধরার বুকে এই না দিনে
খোকার পদার্পণ,
উঠলো কেঁদে জানিয়ে দিতে
সরব আগমন।
প্রসব ব্যথা ঘুচলো মায়ের
দেখে খোকার মুখ,
খোকার মাঝেই পায় মা খুঁজে
অনাবিল এক সুখ।
দিন গড়িয়ে মাস পেরিয়ে
উঠছে বেড়ে খোকা,
ভাবনা বাবার পথ চলাতে
খায় না যেন ধোঁকা।
খোকা তাদের বড় হবে
নিজের মতো করে,
আপনারে বিলিয়ে দেবে
দেশ ও দশের তরে।
কিশোর থেকে খোকা যখন
যুবক হওয়ার পথে,
ছাড়তে খোকা দেশের মাটি
উঠলো হাওয়ার রথে।
মায়ের চোখের জলের সাথে
বাবার দীর্ঘ শ্বাস,
সাত সাগরের ওপার খোকা
গড়লো নতুন বাস।
ঝলমলে এক আলোর ঘরে
দিন কাটালেও খোকা,
ভাল্লাগে না কিছুই যে তার
সবার মাঝেও একা।
হয় নি দেখা বহু বছর
মিষ্টি মায়ের মুখ,
বাবার স্নেহে ধন্য হতে
হয় খোকা উন্মুখ।
উঠলো খোকা ছুটতে দেশে
ভিন দেশে আর নয়,
দেশের মাটির চাইতে আপন
আর কি কিছু হয়?
আসলো ফিরে আপন দেশে
মা আর মাটির টানে,
সবুজ শ্যামল বাঙলা দেখে
জাগলো জোয়ার প্রাণে।
মায়ের গায়ের গন্ধ শুঁকে
জুড়ায় খোকার মন,
বাবার স্নেহে সিক্ত খোকার
কাটে সারাক্ষণ।
সবুজ হাওয়ায় রঙিন ভেলায়
পাল তুলে দেয় খোকা,
মনের ঘরে রঙিন রঙিন
হাজার ছবি আঁকা।
রঙিন রঙিন ছবির সাথে
ভাসায় খোকা তরী,
হৃদয় ব্যাকুল শুনতে যে তার
বাউল জারি সারি।
জারি সারি ভাটির সুরেও
ভাসে কিসের ছবি?
ধুত্তুরি ছাই ভাবছি আমি
কি সব হাবিজাবি!
সুরের মাঝেই পড়ে মনে
খোকার তাদের কথা,
ছেলেবেলার বন্ধুরা আজ
কে যে আছে কোথা?
পাল তুলে দেয় রঙিন ভেলায়
জোরসে মারে লগি,
খুঁজবে এবার হারিয়ে যাওয়া
বন্ধু সুজন সবই।
হারিয়ে যাওয়া পথের বাঁকে
আঁধার ঢাকা রাতে,
চলছে খোকা ভেলায় চড়ে
বন্ধু খুঁজে পেতে।
একটা দুটো তিনটে করে
বন্ধু খুঁজে খুঁজে,
ভরলো ভেলা সেই সে খোকা
রৌদ্র জলে ভিজে।