তারপর আবার দশ লাখ বছর পর
ঘুম থেকে উঠে হাতে মোবাইল নিয়ে দেখবো- একটি অচেনা
নাম্বার থেকে কল এসছে-, ছয় ঘন্টা আগে, তখন
হয়তো ভোর চারটে ছিলো , টেবিলে সকালের নাস্তা খেতে বসে
কল রিটার্ন করতেই,-ওপাশ থেকে শান্ত থেকে বলবে,’আমি পাপড়ি !
বলবে,’ সারাত ঘুম হয়নি,বুকে ব্যাথা দম বন্ধ হয়ে যাবে ভেবেছি
তাই বেশি মনে.., কাঁদতেই বলবে- তুমি কেমন আছ?
নিশ্চয়ই ছিনতে পেরেছ? ‘আমি পাপড়ি,
হয়তো মরবো দু-একেই,
তারপর স্মৃতির পুস্তক খুলে আমাকে শুনাবে ,
‘এক সাথে কতো বিকেল-সন্ধ্যা-সারা রাত কাটিয়ে সূর্যউদয় করেছি,
কত জোছৎসনায় এত কাছে এসেছি ভরা গঙ্গা-উত্তাল সমুদ্রে ডুববো
বলে, ‘ডুবা হয়নি কখনোই, এখন আমি বুড়ি গঙ্গা-তুমি মৃত
সাগার রেখা কেবল,তবুও থেকে আছে, দশ লাখ বছর আগের সেই বাঁধ
ভাঙা প্রবল যৌবোনা শরিৎ স্রোত,-উত্তাল টগবগ অশান্ত অর্ণব।
মহো-ময় চোখের নেশা,বুক ভরাট হয়ে আসা দাবদাহ শ্বাস,
তৃষ্ণানর্ত্ব-কামভাসনারবিরহ লয়ে দুজন দুজনকে বুঝেছি
দু হাত দিয়ে দুজনার চক্ষের জল আড়াল করেছি
ফিরে গেছি পৃথিবীর দুই মেরুতে আবার।
তারপর একটা দির্ঘশ্বাস, ‘আমিতো এমনি তুমি তো বুঝতে,
অভিমানের- হিমালয় অঞ্চল শাখা প্রশাখার চূড়া গুলো তো
তুমি ভেঙে গুড়িয়ে দিয়ে পাশে দাড়াতে পারতে!? দাড়াওনিতো?
জীবনে এত বেশি আক্ষেপ- উদ্বেগ- উৎকন্ঠা
নিয়ে প্রতিক্ষায় ছিলাম, তুমি হয়তো আসবে ,বুঝবে!
বুঝনিতো!? বলবে, এখন, না ফেরবার যাবার বেলা,
তুমি যদি একটু আসতে,’ সেই দশ লাখ বছর
আগের মত করে , একটু ছুঁয়ে দিতাম,
শান্ত করে দিতেম,তোমাকে দেখতাম ,
দেখবার তৃষ্ণা জন্মান্তরে, একটু জড়িয়ে ধরে কেঁদে নিতাম,
যেমন কেঁদেছি বহুবার তোমার সম্মুখে লাখ বছর আগে।
তোমাকে প্রণাম করবো-চরণ ধুলো নেবো,
তুমি এসো,আমার চিকুর শুভ্রতায় ছে গেছে
চোখের ভ্রু'ও, দৃষ্টি কুয়াশায় ভরাট হয়ে আছে
শরীরের টানটান চামড়ায় কুচকে একে ভারেই
বুড়িয়ে গেয়াছি আমি,তুমি দেখলে বলবে-
আমি এক কোটি ঝড়োযুগ পার করেছি।
তবু তুমি এসো,তোমাকে চোখে ঠিক বুঝতে না পারলেও ,
মায়াবী গন্ধে উপলব্ধ করে নেবো,
আমার জন্য কোন ফুল আনতে হবেনা,
কোন রঙিন স্বপ্নও দেখাতে হবে, শুধু তুমি এসো,
তোমার আগমনে আমার দশ লাখ বছরের
পুরোনো সব লাভ ক্ষতি পুষিয়ে নেবো,
একটু এসো- এসো!!