"শৃংখলের বাইরে তুমি"

তোমাকে কবিতার মতোই ভাবি, এভাবেই থাকতে চাই।
কবিতায় নিয়ম আছে, অনিয়মেও কবিতা লেখা যায়,
তুমিও তাই, কবিতা নিয়ম ভেঙে লেখা যায়,
তোমাকেও আমি নিয়মের বাইরে রাখতে চাই,
কবিতা যতিচিন্হ, বিরাম চিন্হ ছাড়া লেখায় যায়,
তোমাকে নিয়ে আমিও বিরাম হিন গল্প কুড়াতে চাই,
কবিতা অন্ত মিল ছাড়া ছন্দে লেখা যায়
কখনো ছন্দ ছাড়াও..

তোমাকে আমি কোন ছন্দ বা যতিচিন্হে রাখতে চাই না। কোন বৃত্তেও না। তোমাকে একটা গ্রহেওনা,
আমি সব জঞ্জাল মহা অগ্নি গ্রহ সৃষ্টি  মহাবিস্ফোরণ
হতে চাই তোমাকে নিয়ে অনিয়মের জ্যাতির অংকে।

কবিতায়-কবিরা কাঁদে, হাসে, রাত জাগে-বুক ফাটে!
আমিও তোমাকে নিয়ে অন্ধকার আকাশ ফেটে যেতে  চাই,
বাতাসের বাহনে আরোহী হয়ে তোমাকে নিয়ে
হেমন্তের সব টা প্রকৃতি গায়ে মাখতে চাই।
শীতের কুয়াশা সূর্য ডোবা পৃথিবী হতে চাই
আবার চাই কবিতার মতো বসন্ত হয়ে কোকিল হতে।

কবিতা কোন শব্দ দূষণ  করে না
কিন্ত কবিতার সব ক'টা শব্দ আগুনের নদীর মতো!
কিনবা মিসাইল এর মতো!
প্রতি চরণে থাকে একটা যগত মৃত্যু করুণ ধ্বংস!
আমার বেতরও তোমাকে নিয়ে সেই হিরোশিমা বা নাগাসাকি'র  মতো হয়ে থাকতে চাই,
আমি তোমাকে নিয়ে নিজেকে নিয়মের
সৃংখলে থাকতে চাইনা।

আমি চাই কবিতার মত কখনো ভেঙে যেতে,
গদ্যের মতো দু'ধারে উপছে যেতে।
প্রান্তর হতে প্রান্তরে যেতে হারিয়ে ।

তোমাকে কবিতার সাথে মেলালে ভুলই হবে,
বরং গদ্যের সাথে মেলান যায়।
কারন গদ্যের কোন সীমারেখা তেমন নেই।
একটা খোলা মাঠের মতো গদ্য আর তুমি আমাতে আকাশীর মতো নীল বেদনার ছাদর হয়ে যেতে চাই।

তোমাকে গদ্য কবিতায় না রেখে আমি রেখে দিতে চাই
মহা কবি মাইকেল মধুসূদন এর "মেঘনাদবধ কাব্য" মহাকাব্যের সারসংক্ষেপ কিছুটা।
বা অন্য কিছু, তুমি এক কোটি শব্দের-
মহা গদ্য করে রেখে দিতে চাই তোমাকে।
তোমাকে কোন নিয়মের সরু বাহনে রাখতে চাই না।
আমি মহা সমুদ্রে ডুব দিতে চাই সব শৃঙ্খলা বুকে নিয়ে।
বিরাম হিন, ছন্দ হিন বা চরণ হিন পথ চলতে চাই,
কোন চরণে রাখতে চাই না তো তোমাকে।

তুমি খোলা আসমানী হয়ে থাকো,
আমি একটা বাজপাখি হয়ে ডানা ঝাপটাতে  থাকবো।
তুপানের শেষ লীলা দেখে নেবো
তবু শৃংখলে রাখতে চাই না।

সব  ছন্দ কবিতায় ভালো লাগে না। সব বৃত্তও নয়।

আমি তোমাকে নিয়ম করে মনে রাখতে চাই না।
চাই না নিয়ম করে স্বপ্ন দেখে আঁতকে উঠি!
সাগরে ঢেউ এর মত নিয়ম করে আমি ফণী তুলতে চাইনা,
আমি গর্জে উঠতে চাই বেলা অবেলায়।
কারন তুমি নিয়ম থেকে অন্য কিছু।  

-নোবেল জয়ী--হাং কাং এর "দ্যা ভেজিটেরিয়্যান"
এর গদ্যের নিয়ম কে আমি ছাড়িয় গিয়ে
তোমাকে ভিন্ন কোথায়ও রাখতে চাই।
পশ্চিমাদের তান্ডবে তচনচ আফগান হতে চাই
তোমাকে নিয়ে, বা  আমাদের  একাত্তর ত্রিশ লাখ লাশ!

আমি কবিতার নিয়মকে যেমন উপেক্ষা করি,
তোমার জন্য তেমন অনিয়মে উপস থাকি!
কবিতার প্রেমে যেমন আমি মত্ত হয়ে সব কিছু ভুলে থাকি
তোমাকে নিয়েও তাই আমি একজীবন দিয়ে রাখি।

কবিতার  বোবা শব্দ গুলোর যেমন প্রান থাকে,
আমার বুকে তোমাকে নিয়ে না বলা রাশিয়া- ইউক্রেন
হতাহত চলে।
আর ইহুদিদের বুলেটে ফ্যালস্টাইন রক্ত সাগর!
আমি এমনিই তোমাকে অনিয়মে থাকতে চাই,
ভাবতে চাই, চলতে চাই।
চলুক আমার বেতর সব গুলো ধ্বংস খেলা!
তবু কোন শৃংখলা চাইনা তোমাকে নিয়ে,
আমাকে তলিয়ে দিক জলোচ্ছ্বাস, ভাসিয়ে নিক মহা বান!
তবুও না, আমি তোমকে নিয়ে কোন শৃংখলের
এক যোদ্ধা হতে চাই না।

আমি অনিয়মের সাইক্লোন হতে চাই,
ঠিক কবিতার মতো হতে চাই যতিচিহ্ন বা চিন্হ হিন,
বিরামচিহ্ন হিন বা অন্য কিছু ..
কবিতার গুছানো শব্দের মতোও হতে চাইনা আমি,
আমি অন্য কিছু কবিতার মতোও না ঠিক।