মনে পড়ে আজ সন্ধ্যাবেলায়
অতীতের কতো কথা,
ভুলতে পারিনা কিছুতেই আমি
হৃদয়ে রয়েছে গাঁথা;
পাকুড়ের ছায়ায় লেলিয়ে শরীর
কেটেছে কতই-না সময়,
কতো না দুপুর হয়েছে সন্ধ্যা
নেমে এসে তন্ময়;
কানামাছি আর লুকোচুরি খেলে
কেটে গেছে বহুদিন,
মনে পড়ে আজ হারানো সেকথা
স্মৃতি বড় অমলিন;
কলার ভেলায় ভেসে ভেসে সবে
করেছি দুরন্তপনা,
মনের কোণে সেদিনের কথা
আজো করে আনাগোনা;
বৃষ্টিতে ভিজে ফুটবল খেলা
সারাবেলা ছোটাছুটি,
চিনির শরবতে ভিজে ভিজে আহা
খেয়েছি শুকনো রুটি;
বাতাসের তোড়ে ছিঁড়ে গেছে কতো
ঘুড়ির রঙিন সুতা,
পলিব্যাগ কাঁধে স্কুলে যাওয়া
পায়েতে ছিলো না জুতা;
দোয়েলের ছানা চুরি করে এনে
রেঁধেছি ভুলকাভাত,
তালোড়ায় গেছি মিঠি ভাই সাথে
করে নানা অজুহাত;
কাঁটার আগায় ঘিন্নি লাগিয়ে
দিতাম বাতাসে ছুট,
ডাবের পাতায় বানাতাম ঘড়ি
সেই স্মৃতিও অটুট;
কতো যে সৌধ- কতো ইমারত
বানিয়েছি কাঁদা জলে,
প্রতাপপুরের নিশানের মেলায়
ছুটে গেছি দলে দলে;
আহা নুনজিলি! আহা নুনজিলি!
তোমার সুপেয় জল,
পান করে মোর মিটেছে তৃষ্ণা
চিরন্তন সে অনল;
মালির বাগানে আম চুরি করে
কতোবার খেয়েছি ধাওয়া,
দৌড়ে পালিয়ে দিঘির দলে
হয়ে গেছি সব হাওয়া;
শুনেছি মালি মরে গেছে কবেই
প্রজন্মরা কেটেছে গাছ,
আসে না ঘুম- দু’চোখে আমার
শুয়ে থাকি এপাশ-ওপাশ;
শুনেছি লাজুক রাজীব নাকি
করে খায় মাস্তানি,
পিস্তলসহ ধরা পড়ে এখন
টানছে জেলের ঘানি;
কোথায় হারালো ইয়ো-ইয়ো আর
ডাংগুলি খেলার দিন,
কোথায় হারালো পালাপার্বণ
নাগরদোলা আশ্বিন;
কোথায় আমার স্নেহের শাকিল
কোথায় বন্ধু স্বপন,
কতো কথা তোদের হয়নি বলা
আছে তা সংগোপন;
কোথায় হারালো হালের বলদ
কোথায় মাটির কুপি,
হাতড়ে খুঁজি পাইনা কোথাও
একা একা কাঁদি চুপি;
কোথায় হারালো গুটিখেলা মোর
কোথায় হারালো শাসন,
সবকিছু যেন কালের গর্ভে
হয়ে গেছে নির্বাসন।
রচনাকালঃ- ১৯ জুলাই ২০২০
কুয়েত