বাংলা কবিতা ডট কম এর উদ্যোগে ২৮ শে এপ্রিল,২০১৮ তারিখ শনিবার কলিকাতায় যাদবপুরের “শহীদ সূর্য সেন মঞ্চে” অনুষ্ঠিত হয়ে গেল “কবিদের মিলন উৎসব ও সাংস্কৃতিক আড্ডা”।এদিনের এই আড্ডা ছিল প্রেম ভালোবাসা মৈত্রের এক অটুট বন্ধন। ছোট্ট বড় সবাই যেন এক আত্মা এক প্রাণ হয়ে গিয়েছিলাম। মনে হয়েছিল একই পরিবারের সদস্য, না মনে নয় মনের গভীরের এক অদশ্য মায়া মমতা,প্রেম ভালোবাসার বাঁধনে বেঁধে গেছি। তাই তো সেদিন রাত্রি ১০টায় মোবাইলটা বেজে ওঠে আর সুমধুর কন্ঠে শুনি “দাদা বাড়ি পৌচ্ছেন”। আনন্দে চোখে জল আসে। ভাবি এতো ভালোবাসা? অনেক অনুষ্ঠানে গিয়েছি কিন্তু এই ভালোবাসা পাইনি মনে হয়। সৌমেনদাকে পাইনি বারবার চেষ্টা করেছিলাম। পরের দিন কথা হল শ্রদ্ধেয় যাদব বাবু, তমাল বাবু, চিত্তবাবু, বিকাশ বাবুর সঙ্গে আর কথা হল শ্রদ্ধেয় কবি কবীর হুমায়ূন মহাশয়ের সাথে। খুব আনন্দ পেলাম। আজ আমরা নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত কিন্তু বারবার মনে পড়ে যায়-“২৮ শে এপ্রিল,২০১৮” কথা, স্মরণে আসে কলিকাতায় যাদবপুরের “শহীদ সূর্য সেন মঞ্চে” সেই ছবি গুলো। মনে হয়েছিল আমরা একই মায়ের গর্ভজাত সন্তান সত্যি বলতে কি আমরা বাংলা মায়ের কোমল, শীতল মাটি থেকে সৃষ্ট সন্তান তাই এই প্রেম ভালোবাসার মেল বন্ধন। যা আজ চির স্মরণীয় ।
অনুষ্ঠানের পূর্বে তৃপ্তি ভরে চা বিস্কুট খেলাম। আর চলল একান্ত আলোচনা। মানে কে কিভাবে এলাম? কখন বেরিয়ে ছিলাম।বাড়ির সবাই ভালো আছে কিনা-এই সব ইত্যাদি। সৌমেনদা আমাদের সবাইকে অনুষ্ঠান গৃহে প্রবেশ করার জন্য বললেন আমরা সবাই গৃহে প্রবেশ করলাম হঠাত দেখি সৌমেনদা নেই। অনেক অনেক খোঁজাখুঁজি করার পর দেখি উনি একাই মঞ্চে চেয়ার,টেবিল,ব্যাচ ইত্যাদি সাজাচ্ছেন। কখনও দেখি তিনি পানীয় জলের জারকিন কাঁধে নিয়ে আসচ্ছেন এই সব। বিকাশ বাবুকেও দেখলাম খুবই ব্যস্ত। মাঝে মাঝে বিকাশ বাবুর আদরের ডাক-“সৌমেন, সৌ্মেন কোথায়? আমি ও আরও কয়েক জন কবি দাদার সাথে কাজে লেগে পড়ি। সৌ্মেনদা অভিভাবকের মতো স্বাদরে বলেন- আপনি বহু দুর থেকে এসেছেন ক্লান্ত একটু বিশ্রাম করুন। সত্যি আমি আমরা কেউ ক্লান্ত ছিলাম না। এঁকে অন্যের ভালোবাসায় সতেজ ছিলাম ক্লান্ত ছিলাম না।
কাউকে কারোর সঙ্গে পরিচয় করতে হয়নি। মাননীয় পল্লব (এডমিন,বাংলা কবিতা ডট কম) অবদানে অনেকই অনেককে নিজে থেকে চিনে নেয়।এলেন সমীরদা মানে শ্রদ্ধেয় সমীর প্রামানিক। দেখি সবার সঙ্গে হাত মিলাচ্ছেন আর মুখে সুন্দর মিষ্টি হাসি। আমি আগিয়ে যেতে বুকে জড়িয়ে ধরে নিলেন। আর কানে কানে বললেন- “পেশায় আমরা স্বাস্থ্য বিভাগের লোক আর কবিতা ডট কমের সদস্য”। এলেন অনন্ত গোস্মামী হাত মেলালাম আর একান্ত আলিঙ্গন। উনার পাঞ্জাবী আর আমার পাঞ্জাবী একই রঙের ছিল এই নিয়ে মজা হল, আমি ব্যাক্তিগত ভাবে অনেকর সঙ্গে ছবি তুলি।রণজিৎ দা, রিনাদির, জয়শ্রীদি, সুমিত্রবাবু, পরিতোষ বাবু, অজিত বাবু, বিকাশ বাবু অজিতেশ নাগ বাবুর সাথে সমীর দা পরিচয় করিয়ে দেন। খুব ভালো লেগেছিল। আলাপ আলোচনার সাথে ছবিও তুলি। এই সব মুহূর্ত গুলো চিত্র বন্দী হয়নি। শুধু স্মৃতিতে-------
এই অনুষ্ঠানে যারা উপস্থিত ছিলেন-
অজিত কুমার কর, ইমানুল হক,অজিতেশ নাগ, নবনীতা বসু হক, বদরুল আলম, চিত্তরঞ্জন সরকার, পারমিতা ব্যানারজী, জয়শ্রী কর, যাদব চৌধুরী, জয়শ্রী রায়, মল্লিকা রায়, প্রভাত ঘোষ,অরূপ গোষ্মামী, সৌমেন বন্ধ্যোপাধায়, মহঃ সানারুল মোমিন,অনন্ত গোস্মামী,লিলি দাস, যোগেশ বিশ্বাস, তমাল ব্যানারজী, রীনা বিশ্বাস, অসিত কুমার রায়, সৈকত পাল,সুখেন্দু মাইতি, সংকেত চট্টোপাধ্যায়, দেবদাস মৈত্র, সুখেন্দু মাইতি, বিভূতি দাস,দিলীপ চট্টোপাধ্যায়, প্রশান্ত ঘোষ, মিতা চ্যাটারজী সমীর প্রামানিক, পরিতোষ ভৌমিক, প্রবীর দে, বিকাশ দাস, বিবেকানন্দ সামন্ত তনয় রায়, মানস মাইতি, রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস, হজরত সেখ, গায়েত্রী ঘোষ, রণজিৎ মাইতি, বিশ্বজিৎ শাসমল, শিবশংকর,রূপক মুখোপাধ্যায়, স্বপন কুমার বিশ্বাস, উদয় চক্রবর্তী, সুবীর পাণ্ডে, আনোয়ার আলী, সোমা চট্টোপাধ্যায়, অমিতাভ সুর, তরুণ কান্তি প্রিয়, আশিষ চৌধুরী, আরও অনেক শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি।এছাড়াও কয়েক স্বেচ্ছা সেবী ছিনেল।
অনুষ্ঠান শুরু হতে সময় লাগে বেলা ১১.৩০ টা আর শেষ হয় বৈকাল ৫.৩০টা, অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিকাশ দাস ও মিমি ম্যাডাম।
সঞ্চালকের অনুরোধে সভাপতির আসন গ্রহন করেন-অজিত কুমার কর মহাশায়, বিশেষ অতিথি এনামুল হক মহাশয় ,অজিতেশ নাগ, নবনীতা বসু হক, বদরুল আলম। অতিথদের উত্তরীয়, ব্যাচ পুষ্পস্তবক,উপহার দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়।মাননীয় বিকাশ বাবু মঞ্চে উপস্থিত স্মনানীয় ব্যক্তিদের পরিচয় করিয়ে দেন। অনুষ্ঠানটি শুরু হয়েছিল ভারতী জাতীয় সঙ্গীত ও বাংলা দেশের জাতীয় সঙ্গীত দ্বারা। আনন্দে আবেগে শরীর হীম হয়ে আসছিল। এর পরেই মাননীয় আসফাকুর রহমান পল্লব (এডমিন,বাংলা কবিতা ডট কম)শুভেচ্ছা বার্তা শুনাবার জন্য চেষ্টা করা হয় কিন্তু যান্ত্রিক গোলমালের য হয়নি। পাঠ করেন মাননীয় বদরুল সাহেব মহাশয়। মনে হচ্ছিল তিনি ও আরও অনেকে বাংলাদেশ থেকে আমাদের মাঝে স্বশরীরে উপস্থিত আছেন।
যে বিশষে যিনি মূল্যবান বক্তব্য রাখেন তা হল।–
কবি ইমানুল হক-“কবি বা লেখকের তার সৃষ্টিতে দায় ও কর্তব্য”।
কবি অজিতেশ নাগ- “কবি সম্মেলনের উদ্দেশ্য”।
কবি ও আলোচক যাদব চৌধূরী-“কবিতা কেন লিখি, কবিতার বিবর্তন ও সমাজ জীবনে তার প্রতিফলন”।
কবি প্রভাষ ঘোষ-“ অনুবাদ কবিতা ও আধুনিক কবিতার বিশেষ দিক”।
এর পরের দ্বিপ্রহরের আহারের অংশ গ্রহণ। এঁকে অপরের শরীরে শরীর রেখে খেতে বসলাম। আমার বাম পাশে ছিলেন কবি অমিতাভ সুর আর ডান দিকে দাড়িয়ে ছিলেন রিনাদিদি(হাসি)। দিদি বারবার বলছিলেন এবার কবিতা আসর মুর্শিদাবাদে যেন হয়। আর সমীর দাদা কলকাতার বাইরে কোথাও করার জন্য বলছিলেন।আমি খুব আনন্দ পাচ্ছিলাম। আমি প্রস্তুত আগামীতে আমি আমার জেলায় কবিতা আসর করার জন্য। শুধু চাই শুধু আপনাদের হৃদয়ের একান্ত ভালোবাসা ও আশীর্বাদ আর পরম করুণাময়ের দোয়া। এই অপূর্ব দৃশ্যের কামেরা বন্দী মনে হয় নি। শুধু রয়ে আছে মনের স্মৃতিতে-থাকবেই চিরকাল। সৌমেন দা আর সৈকত প্যাকেট দিতে খুবই ব্যস্থ ছিলে। প্যাকেটে ছিল ফ্রাইড রাইশ,চপ মিষ্টি আর ... মন ভরে খেলাম আর কত গল্প হল।
আবার অনুষ্ঠান চালু হল-
আমি দ্বিতীয় কবিতা পাঠ কারী- কবিতা “আদৃশ্য বন্ধন”।
প্রবাসী ও বাংলাদেশে কবিদের কবিতাও পাঠ করা হয়।–
মহম্মদ মনি রুজ্জামান- কবিতার আসর সুখের বাসর।
জাহিদ হোসেন রঞ্জু-ঐ এলো, এলো সব,
অনিরুদ্ধ বুলবুল-প্রীতি নেই শুমার,
মৌটুসি মিত্র গুহ- মিলন মেলা,
গৌরাঙ্গ সুন্দর মহাপাত্র-এত কবি তবু কাঁদছে কবিতা।
কবিতা পাঠ করেন সৌমেন বাবু ও মিমি ম্যাডাম।
প্রকাশ হল রামধনু গ্রন্থ ও ফসিল---- গৃহ কর তালীতে পরিপূর্ণ হল। চারিদিকে আনন্দের জোয়ার। শেষ কবিতা পাঠ কারী শ্রদ্ধেয় কবি যাদব চৌধূরী।
কবিতা পাঠ,গান আলোচনা মাধ্যমে শেষ হল কবিতার আসর প্রায় বৈকাল ৫.৩০ টায়।
তখন সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে কিন্তু প্রাণের কলকাতা নগরী কৃত্রিম আলোয় আলোকিত। এঁকে এঁকে ফিরে যায় নিজ নিজ স্থানে বুক ভরা ভালোবাসা নিয়ে হাজার সুখের স্মৃতি নিয়ে।
“২৮ শে এপ্রিল,২০১৮” এক স্বপ্নের স্থান আর কলিকাতায় যাদবপুরের “শহীদ সূর্য সেন মঞ্চে” এক স্বপ্নের মিলন স্থান।
তাই আবার বলি জয় হোক বাংলা কবিতার।
জয় হোক বাংলী কবির।
জয় হোক বাংলা কবিতা ডট কম এর।
সকলে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা রেখে শেষ করলাম।
ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন এই কামনা থাকল।