বৃদ্ধাশ্রম
নিত্য নিঃসঙ্গ প্রভাত কড়া নাড়ে দ্বারে,
বিত্ত বিভব ঐশ্বর্যে ভরা সুখ সংসার
অগাধ দৌলত ; গরবে আদরের সন্তান
লেখাপড়া পাট চুকাতে বিদেশে পাঠায়।
প্রবাসে সন্তানগণ বাঁধে সুখ নীড়
বিদেশি ললনা নিয়ে তাদের টগবগে জীবন,
ভুলে যায় পিতৃকথা— মা বেঁচেছে আগেই মরে!
একাকী প্রবীণ জীবন সেবা তরে চাকর,
এভাবেই সন্তানগণ দায়িত্ব ছাড়ে!
প্রবীণ পিতৃ মন এসব নাহি চায়
নাতি নাতনি ভরা সংসারে
কাটাবে শিশুকাল ন্যায়।
প্রতিবেশি সংসার সুখ দেখে নিরালয় কাঁদে!
জন্মভূমি তরে ফেরাতে সন্তানদের শুধায়,
কী প্রয়োজন! চাকর বাকর তো আছে?
স্বপ্নের দেশ ছেড়ে কেউ কি ফিরে আসে?
কিছু বলার নেই পিতার,
একাকী বসবাস নীরবে অশ্রু বানে ভাসে!
সন্তানদের আচারে একদা নিজ গৃহ ছাড়ে!
বৃদ্ধাশ্রমে ঠাঁই নেয় অভাগাদের সাথে—
সঙ্গ পাবার মানসে!
এভাবে যাপিত জীবন চলে সায়াহ্নে।
ব্যথিত হৃদয় দিন দিন রক্ত ক্ষরে,
অবশেষে একদিন পাড়ি দেয় ওপারে!
পিতার লাশ গ্রহণে কর্তৃপক্ষের আমন্ত্রণ,
অহেতুক দেশে ফেরার কিবা আছে?
অস্বীকার করে সন্তানেরা পিতৃ লাশ গ্রহণে।
দাফনে অর্থ-কড়ি লাগে যা পাঠাবে!
পিতৃ লাশ প্রতি বীতশ্রদ্ধ সন্তান!
বনে যায় বেওয়ারিশ লাশ পিতার!
আঞ্জুমান মফিদুল নিয়ে যায় লাশ,
জীবনযুদ্ধে এক সকল বাবা
বেলা শেষে এসে অসফল!
রচনা: ১৮ নভেম্বর, ২০২৪।