ভূমিরূপের মধ্যে আমার সবচেয়ে প্রিয় পাহাড়,
তার হাতছানি অগ্রাহ্য করে সাধ্য কার?
সেইবার দার্জিলিং ভ্রমণ শেষে কাঞ্চনজঙ্ঘার পাদদেশে,
হঠাৎ চোখে পড়লো সাইনবোর্ড ‘পার্বতী হোমস্টে’।
যাত্রাপথের ক্লান্তিতে যখন সবার চোখে ঘুম,
তখন হাতজোড় করে দাঁড়ালো পার্বতী গুরুং।
তার মিষ্টি হাসি কিভাবে করবো বর্ণনা,
যেন পাথরের বুক থেকে নির্গত ঝরনা।
তার মাথার চুল রুক্ষ আর কোঁকড়ানো,
যেন আবহাওয়ার সঙ্গে একেবারে খাপ খাওয়ানো।
তার অবহেলা আর অনাদরে উপেক্ষিত গাল,
যেন কাশ্মীরি আপেলের মতো টকটকে লাল।
তার পরনের অপরিষ্কার আর পূতিগন্ধময় পোশাক,
তবু আজও ভুলিনি তার ‘বাবুজি’ ডাক।
আমি ছিলাম বাঙালি,সে ছিল নেপালী,
তাকে দেখে মনে বাজলো রাগ ভূপালী।
তার হাতে বানানো গরম গরম মোমো,
ঝিরঝিরে বৃষ্টির সন্ধাবেলায় লেগেছিল আমায় অমৃতসম।
জঙ্গল থেকে লাকড়ি সে করে জোগাড়,
রাতের বেলা আয়োজন করেছিল ক্যাম্প ফায়ার।
সকালবেলা তার পরিবেশিত দার্জিলিং চায়ের কাপ,
চুমুক দিয়ে পেয়েছিলাম আমেজ ভরা উত্তাপ।
সে ছিল কুকরি চালানো বীরাঙ্গনা গোর্খা,
তবু স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় তার তৈরি থুকপা।
তিনদিন পর যখন হলাম বাড়ি রওনা,
সে বলল,“অগলি বার জরুর আনা”।