মহামায়া চলে গেছে কৈলাস এক্সপ্রেসে চড়ে,
আমিও চলে এসেছি আজ দুর্গাপুর ছেড়ে।
এবার চেন্নাইয়ে চিকিৎসা সেরে ফেরার পথে,
দেখা করতে এসেছিলাম আমি তোমার সাথে।
এতোদিন আমি ভাবতাম তুমি ইস্পাত নগরী,
পরে বুঝলাম তুমিও মায়া মমতার অধিকারী।
তুমি নও শুধুমাত্র কারখানার বিষাক্ত ধোঁয়া,
তোমার মধ্যে পেয়েছি আমি প্রাণের ছোঁয়া।
আমার ছোট মামার বাড়ি হওয়ার সুবাদে,
সপরিবারে বেড়াতে আসি আমি কিছুদিন বাদে।
এই নিয়ে হাতে গোনা সাতটি বার,
সানন্দে করেছি আমি তোমার আতিথেয়তা স্বীকার।
আমার আগরতলায় দশ টাকার কয়েন অচল,
তাই তোমাকে ফেরত দিয়ে দিলাম সকল।
বিনিময়ে তোমার সেলুনে চুল কেটে গেলাম,
এক মাস পর্যন্ত তোমার স্মৃতিচিহ্ন পেলাম।
তোমার নার্সারি থেকে কিনেছি ফুলের চারা,
ফুল ফুটলে তুমি হয়ে এসো ভোমরা।
মামার ভাঙা হেলমেট পরে স্কুটিতে ঘুরে,
ভগ্নহৃদয় নিয়ে চলে এসেছি বাড়ি ফিরে।
মামা কিনে এনে দিয়েছেন ফল রকমারি,
যেন তোমার কথা ভুলতে না পারি।
আরণ্যকের সত্যচরণ ভানুমতীর প্রতি চেপে আবেগ,
কিছু না বলেই জঙ্গলমহল করেছিলো ত্যাগ।
আমি যেতে চাই না নিভৃতে নীরবে,
মনে আগরতলার পরেই তোমার স্থান রবে।
ভালো থেকো রবীন্দ্রনগর আর সপ্তর্ষি পার্ক,
তোমাদের স্মৃতি অন্তরে অমর হয়ে থাক।
ভালো থেকো বিধাননগর,ভালো থেকো মুচিপাড়া;
ঘুমের মধ্যে তোমাদের ডাকলে দিও সাড়া।
জীবনে যতদিন থাকবে অবাঞ্ছিত ব্যক্তির যন্ত্রণা,
হে দুর্গাপুর,আমি আর আসবো না।