গতকাল আমি যখন গিয়েছিলাম দেখাতে ডাক্তার,
সেখানে তোমার সঙ্গে পরিচয় নিলোফার আখতার।
আমার সিরিয়াল নাম্বার ছিলো সবার শেষে,
হঠাৎ কানে নারীর কন্ঠস্বর এলো ভেসে।
"Excuse me ভাইয়া,আমি ডাক্তারবাবুকে দেখাবো;
দয়া করে বলবেন কোথায় নাম লেখাবো।"
শুনে তার যন্ত্রণাকাতর সেই করুণ জিজ্ঞাসা,
আমি হারিয়ে ফেললাম আমার মুখের ভাষা।
দেখে তার দুধে আলতা রঙের ত্বক,
আমি খেলাম ৪৪০ ভোল্টের বৈদ্যুতিক শক।
তার মাথায় ছিলো নীল রঙের হিজাব,
বেশভূষায় প্রকাশ পাচ্ছিলো একটা রক্ষণশীল ভাব।
তার হালকা আর পাতলা দেহের গড়ন,
সারা শরীর জুড়ে বিরাজমান শালীনতার আবরণ।
মন্ত্রমুগ্ধ পরিবেশে জানিনা কতক্ষণ হলো ব্যতীত,
আবার তার কথায় আমার ফিরলো সম্বিত।
"Excuse me ভাইয়া,আমি ডাক্তারবাবুকে দেখাবো;
দয়া করে বলবেন কোথায় নাম লেখাবো।"
আমি বললাম,"আজ কিভাবে ডাক্তারবাবুকে দেখাবেন?
আজকে নাম লেখানো শেষ,আগামীকাল আসবেন।"
সে বললো,"ডাক্তারবাবুর অনেক নাম শুনেছি;
তাই আমি বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসেছি।
আজ হোটেলে থেকে আগামীকাল ফিরে যাবো,
বলুন কাল কিভাবে ডাক্তারবাবুকে দেখাতে আসবো?"
আমি বললাম,"আপনি আমার সঙ্গে চলুন;
আমার জায়গায় আপনি ডাক্তার দেখিয়ে ফেলুন।"
সে বললো,"তা কেমন করে হয়?!
আপনার সঙ্গে আমার নেই কোন পরিচয়।"
আমি বললাম,"মানুষ মানুষের জন্য যখন;
এতে পরিচয় থাকার কি আছে প্রয়োজন?"
সে বললো,"আপনার এই ত্যাগ স্বীকার;
কিভাবে পরিশোধ করবো এই ঋণ আপনার?"
আমি ভারতীয় হিন্দু,সে বাংলাদেশী মুসলমান;
তার পিতা কি করবে আমাকে কন্যাদান?
বুকে পাথর চেপে চেম্বার থেকে বেরিয়ে,
বাড়ি ফিরে এলাম আমি বিরহব্যথা নিয়ে।
তোমার আমার হয়তো দেখা হবেনা আর,
যেখানেই থাকো তুমি ভালো থেকো নিলোফার।