দীর্ঘদিন পরে আজ বরিশাল যাচ্ছি
ট্রেন ছাড়িতে এখনো ঢের সময় পড়ে আছে,
লোকজন এলোমেলো হয়ে সিটে বসা।
বাহিরে প্রাণের হুলুস্থুল আয়োজন,—
বিকেলের ক্লান্ত রোদ গায়ে মাখামাখি!
জানালা দিয়ে ফাল্গুনের মৃদু বাতাস হৃদয় ভাসায়;
ভিতরে আনন্দের অনুভূতি বহিতেছে,
কেউ দেখে নাকো আহা আমি ছাড়া,
কখন বরিশাল পৌঁছে যাবো ভেবে ভেবে
ট্রেনের হরেন হঠাৎ উঠিলো বেজে চারিদিকে!
গভীর মুগ্ধ নয়নে যখন দেখিতেছি
খোদার করুনা ভরা পৃথিবীর মেঘমালা থরেথরে!
কে যেন কহিয়া উঠিলো ক্লান্ত স্বরে বলে,
একটা পয়সা দেন আমারে,—
কোলে তার শিশু এক ঘুমিয়ে আছে!
চোখে মুখে কেবলই বিষাদ ভরা ছায়া!
বয়স তার সাত আট এমনই হবে,
কহিলাম নাম কি-গো তোমার
বলিল নাম তার সুমাইয়া
থাকে সে বস্তিতে— কোলে তাহারই ভাই!
চুল আউলা ঝাউলা শতাব্দীর যত ধুলো-ময়লা
সব যেন লেগে আছে তারই শরীরে;
করুনা ভরা চেহারাখানা তার ফুটিয়াছে—
এই পৃথিবীর পর কোনো এক দরিদ্রের ঘরে!
কেউ অট্টালিকায় কেউ জন্মায় ফুটপাতে!