যেই আমাকে জীবনভর ভালোবাসিবে বলে
একদিন এসেছিল বুকে
পারিনি তাকে ধরে রাখতে
তাহারেই পড়ে আজ মনে বারংবার!
অঘোর রাত্তিরে লক্ষ্মী পেঁচার সুমধুর গান শুনিয়ে
যেই আমাকে প্রতিদিন ঘুম পড়াতো
ফের সকালে দোয়েল কণ্ঠে
আবার আনিতে নিদ্রায় আঘাত
তাহারেই পড়ে আজ মনে বারংবার!
কোথায় রাখিয়াছি বাঁশ বাগানের নীচে আজ তারে
ইষ্ট পাথরের দেয়াল বাঁধানো
জন-নির্জন গোরস্থানে;
বিরহ ব্যথিত আত্মারে পারি নাকো
কোনোমতে সান্ত্বনা দিতে
তাহারেই পড়ে আজ মনে বারংবার!
ঝরে অঝোর নয়ন দু’কোনা বেয়ে বেয়ে সে কত
মলিন কণ্ঠে ফুটে নাকো স্বর,
কত আদর সোহাগ দিয়ে ভাঙিয়েছে রাগ
পারিনি তখন বুঝিতে বেখেয়ালি মনে
তাহারেই পড়ে আজ মনে বারংবার!
আমি কোথাও চলে গেলে পর
যদি হতো আসিতে ঢের দেরি;
সে থাকিতো পথের পানে চেয়ে
কখন আসিব আমি ফিরে এই ভেবে
তাহারেই পড়ে আজ মনে বারংবার!
বলিতাম লক্ষ্মীটি বউ আমার এখনো জেগে আছো
সবাই তো পড়িলো ঘুমিয়ে
তুমিও তো পারিতে একটু ঘুমাতে;
বারান্দার চেয়ারে ঠেস দিয়ে বসে আছো
আমার তরে এই রাত্রির গভীরে
তাহারেই পড়ে আজ মনে বারংবার!
বলিতো সে
এ যে আমার কর্তব্য আপনার প্রতি
নইলে যে ওপারে গিয়ে—
জবাব দিবার থাকবে না কিছুই।
আমি যেন পারি আপনার আশীর্বাদ লয়ে
শেষ নিদানে যেতে
তাহারেই পড়ে আজ মনে বারংবার!
বলিতাম লক্ষ্মীটি আমার
তুমি মাঝে মাঝে কি যে বলো না?
তুমিই ভালো জানো?
আজ তুমি তোমার কথাই রাখিয়া গেলে
আমারে করে গেলে হৃদয় নিঃসঙ্গ করে
তাহারেই পড়ে আজ মনে বারংবার!