কতো না করিতো আদর স্নেহ
কতো না করিতো বুকে নিয়ে
সোনালী দু’গালে চুম্বন হুসেইনরে নবী!
করিতো না চক্ষু আড়াল পলকে
সেই হুসেইন দেয় আজিকে
ফোরাত ভর্তী রক্তস্রোত কারবালায়
নানার উম্মত নাজাত পাবে বলে!
ওহে মুসলিম করো নাকি তারে
দশই মহররমে দু’হাত তুলে স্মরণ!
এজিদ সৈন্যের হতে দেয়
ছয় মাসের আলী আজগর প্রাণ
আরও দেয় আটাত্তরজন সহস্থে বিলিয়ে!
করিয়াছে এজিদ ঘৃণ্যতম এক ইতিহাস
কলঙ্কের কালিমা পৃথিবী জুড়ে!
সমস্ত দিনমান যেন অন্ধকার ঘনসিক্ত
থরথর কম্পন ভারী আকাশপাতাল
দিয়েছিল মা ফাতিমা সন্তান নির্বাসন
বাপের উম্মত নাজাত পাবে বলে!
নয়ই মহরম সারারাত কান্নার রোল ঝরেছিল
নয়নের মনি আলী আজগর পানিতৃষ্ণা লইতে
হুসেইনের কোলে দেয় জীবন
এজিদ সৈন্যের হাতে নিষ্পাপ শিশুটি!
আলী আকবর চলে তারই বদলা নিতে
একের পর এক তীর কেড়ে নেয় তাজা প্রাণ;
সব গেলো ঝরে রইলো বাকী জয়নুল আবেদীন!
হচ্ছে তৈরী যুদ্ধের জন্য সজ্জিত পোষাকে হুসেইন!
নীলের আকাশ পাহাড় পর্বত সিন্ধু ভূমি
সবই যেন ভাসে কান্নায়
মলিন মৃত পৃষ্ঠের মতোন হায়!
সোনালী ঘোড়ার পিঠে চলে ময়দানে
একের পর এক তীর ধনুক ছুঁড়ে আসে গো;
ক্লান্ত অবসাদ পেতে ফোরাত নদীর পানে
একমুঠো পানি নেয় তৃষ্ণা মিটাতে!
কিন্তু মুখে নিতেই হয়ে যায় রক্ত
না খাইয়ে চলে আবার যুদ্ধক্ষেত্রে;
যখনই ঘোড়ার পিঠে চাইলো উঠিতে
কোথ থেকে এলো সীমার‚
বসলো বুকের উপর‚
গলায় চালালো খোলা তরবারী
বলিল হুসেইন এরে সীমার
জানি আমি করিবি তুই আমায় কতল!
কিন্তু তার আগে দিবি কি আমায়
দু’রাকাত জুম্মা পড়িতে আজে;
দিলো তারে সুযোগ —
এই নামাজরত অবস্থায় নিষ্ঠুর এজিদ বাহিনী
মারিলো তীর হুসাইনরে এঁকে একে বাহাত্তর বুকে;
বিষাদ ব্যথা যন্ত্রণায় এভাবেই গেলো
হুসাইনের জীবন কারবালার রক্ত মাটিতে মিশে!