পিয়াসী, তুমি আসবে বলে আমাকে কথা দিয়েছিলে
তারপর কই গিয়াছ আমাকে ফেলে কোন দূর মেঘে
সেই দীর্ঘল প্রতিক্ষায় আজো এসে ফিরে যাই
তবু পাই নাকো তোমার দেখা?
এই নীল দুপুরে তুমি আর আমি কতদিন মিলিয়াছি
আমরা দু’জন: ভোরের ধূসর কুয়াশায় সোনালী ঘাসে
শিশিরের ঝলমলে খেলা দেখে মনে হল,
আজ নয় বহু আগে শঙ্খ রূপসীর স্তন থেকে
ঝরেছিল এইসব বিন্দু বিন্দু জল।
কবেকার জননীর অন্ধকার জগত থেকে
এসেছিলাম এই দেশে—
জীবন মৃত্যুর সপ্রতিভ হতে জলসিঁড়ির বুকে
গেলাম খুঁজিতে: মনে হয় তারি বুকে
গিয়াছ হারিয়ে এই নীল দুপুরে!
দূর উপকূলে অজস্র চিল আজ মাতিয়েছে খেলায়,
শুনি তার দাপট পাখনার জোড় হাওয়ায়।

পিয়াসী, একদিন নিয়েছিল ডেকে আমাকে
যখন ব্যথার মৃত্যু অগ্নি সঙ্গে করে হেঁটেছিলাম
পৃথিবীর পথে বহুদিন!
সমস্ত প্রলয় এসেছিল দাবানলের মত
আমারে গ্রাস করিতে!
সেদিন দু’দণ্ড শান্তি দিয়ে তার নরম দেহে
আগলিয়ে রেখেছিল জলসিঁড়িটির পানে;
শতাব্দীর পিয়াসী মোর—
কালো অন্ধকারে ভিতর কখন যে আলো আসে
আজো আমি জানি নাকো শ্রশ্বার মনে।
যদি আবার পাই দেখা সে কালের মতোন
দেখিব এক সঙ্গে বুনোহাঁস শালিকের ভির,
হারিয়ে যাব সেই স্বপ্ন আর ভালোবাসা নিয়ে।