শুনো তবে আমার এ হৃদয়
একদিন এক দুহিতাকে ভালোবেসে
কোথায় যেন হারিয়েছে দিশা।
তখন ছিলো সকাল বেলা
শীতের আমেজে শিশিরের আলপনা ঝরে
উঠানে নেই গো কেউ আর
শুধু সে আর শুধু আমি!
দেহ জড়ানো একখানা চাদর গায়ে
আমারও দেহে চাদরের নাভিশ্বাস ঘ্রাণ;
রাত্রি তারকার মতো তার
কাঁচা বুকের স্তন ফুটে আছে।
কোনো এক পুরাণ কাহিনীর জগতে
আমাদের দু’জনার মন ডুবে আছে
প্রেমের উপমা ভাষা দিয়ে হয় নাকো তখন!
সমস্ত নীলিমা ধূসর মেঘে ডাকা
ভীষণ ঠান্ডা হৃদয়ে জড়ো হয়
চক্ষু তার টানাটানা উত্তেজিত‚
জানি আমি পৃথিবীর রেখায়
তার সাথে হয় নাকো কারো তুলনা;
ভালোবেসে এই নারী পঞ্চমীর জোয়ারে
হৃদয়ে আসে বারবার ফিরে!
জীবনরহস্যের শিখরীর থেকে
ছাতইন ফুলের গন্ধে ভেসে উঠে মন
চারিদিকে যেন তারই রাজত্ব‚
বলিলাম ছাতইন ফুলের গন্ধ
মুখ থুবড়ে মৃদু হাসি খেলে
বলিল বেশ তো চমৎকার গন্ধ তাই না
আমিও বলিলাম হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ!
গভীর ধ্যানে নিবিষ্ট সুরে বলে
এ যেন কথা নয় মধু ঝরে
অম্লান স্বাদ ভিতরে গিয়ে ঠেকে।
উঠানে খড়ের উপর দু’জনে মুখোমুখি বসিয়েছি
সে এক রুপকথার জগতে‚
পৃথিবীর অন্য এক মোহনায়‚
হৃদয়ে সিক্ত শ্যামলের ঢেউ উপচে পড়ে!
চড়ুই পাখির চিৎকার আশেপাশে
আমিও যেন তার মতো চিৎকার করে‚
কিছু বলিতে চাই উজাড় করে
মনের সমস্ত ভাপসা করিতে চাই দূর।
তবুও হায় কি এক ভয় সর্বদা
পারি নাকো বলিতে তারে কিছু
সে-ও যেন বুঝে না আমার এ ভাষা!
জীবনের আজ কতোটি বছর গড়িয়ে
পুনরায় ধরা দেয় অতীত শোকাবহ;
ঘড়ির সময়ে রাত্রিদিন ক্ষয়ে
ফাল্গুনের উৎসবে মাতিয়াছে রৌদ্রস্নাত;
জেগেছে কি অপূর্ব সুন্দর সকাল।
তবুও সেই একটি সকাল বারবার মনে পরে
ফিরে আসুক আবার কুয়াশাচ্ছন্ন শীতার্ত প্রান্তর!