ওগো নিশীথ কন্যা হেঁটে যাও আজও তুমি
আঁকাবাঁকা ঝিলের পথ ধরে নিভৃতে!
দু’ধারে দুর্বারঘাস জেগেছে ঢেউয়ের মত,
মৃদু বাতাস হৃদয় ছুঁয়ে যায় হিমের আরব্যোপন্যাসে
তুমি কথা বলো শিশিরের শব্দের মতন!

এইপথ না জানি কখন শেষ হবে যেতে যেতে
একঝাঁক বন্যপাখির মত কখন অদৃশ্য হবে,
কুয়াশার আড়ালে চোখের নিমিষে মোর!
জরাজীর্ন দেহ দুর্বল যাহার লই পৃথিবীর পানে
সেই তুমি কাছে এসে কবে দিবে ধরা!

অপূর্ব প্রেতরূপের নারী তুমি এই দেশে
জগদীশ্বরের অলিক প্রভা নিয়ে আসিয়াছ!
আমি যদি সেই প্রভাদানে হারিয়ে যাই
লবে গো মোরে তুলে আঁচলের ছায়াতলে,—
তোমার জন্ম জন্মান্তর ইষ্ট-পিন্ডে জড়িয়ে!

কবে আমার এ জীবন দিয়েছি তোমারে,
কত কবিতার ছন্দে লিখে গেলাম তোমারে!
এক নিশীথ কন্যার আত্মতুষ্টির জগতে,
প্রদীপ জ্বালিয়ে আবছা অন্ধকারে নির্ঘুমে
লিখেছি এসব অব্যক্তনামা হৃদয় থেকে!

তুমি দিতে পারো মৃত্যুর মত অগাধ ব্যথা
দিতে পারো বসন্তের মৃদু বাতাসের মত শান্তি!
বহুলোকের ঢের আঘাতে জীবন ঝলসে গেছে,
যে নাবিক হাল ভেঙ্গে— বেড়িয়েছে পথে পথে হায়
আজ তার আকাশ খোঁজার স্বপ্ন তাঁকে পেয়ে!

শ্রবন বর্ষার গুড়ি গুড়ি জল ঝড়িতেছে বেশ!
আকাশে আকাশে ছাড়ায়ে রয়েছে বিপুল জলদ
ডাকিতেছে যেন দু’জনার মন পূবের হাওয়া!
এমনই দিন বাঁধলার মুহূর্তে মুখোমুখি সচালায়তন
আনন্দের খই ফুটে এখানে শকুন পাখির মতন!