আবার একটি রাত কেটে গেলো নির্ঘুমে
সারারাত একতিল ঘুম হয়নি।
বড্ড যন্ত্রনার মধ্য জীবন জেগে আছে,
বাহিরে আষাঢ়ের নিগুঢ় বৃষ্টি ঝড়িতেছে
আসমান ভরা মেঘে কখন থেকে!
পৃথিবীর সব আঁধার আমার চোখে
কোথাও কেউ আছে নাই জল্পনায় কল্পনায়।
আহত নয়ন চেয়ে আছে মশারীর ভিতর
ঝুপঝুপ বৃষ্টির বহমান ধারা নেমে আসে।
কবে ঘুমায়েছি স্বস্থির দুয়ার মেলে
কবে তার কোলে মাথা পেতে রয়েছি তাকায়ে!
আজ তবুও ব্যথা হয়ে বৃষ্টির মতন ঝরে
চমকিছে বিদ্যুৎ মনের আকাশে
একদিন পৃথিবীর সব জ্যোতি ফুরায়ে
রাত্রিও অনুশোচনায় বুক ভাঙে কাহার ব্যথায়।
প্রেম মানুষকে খুন করে
বহুদিন জিম্মি একঘেয়ে করে রাখে
তারপর সব আশা আকাঙ্খারে ঝেরে ফেলে।
পঞ্চমির চাঁদ মরে গেছে
বাহিরের পৃথিবী অন্ধকারে বুদবুদে
জোনাকিপোকা কিংবা গুবরেপোকা—
গান গায় খানিক সময় ধরে
আবার পুনরায় নিস্তব্দ ক্লান্ত ঘুমে
সর্বহারা পৃথিবীর ধূলোময়লার মানুষরা
কোন শিকলে বাঁধা ঘুম নাই ঘুম নাই তবুও ঘুম।
এক একবার মনে চায় এইসব মানুষের,
ক্লান্ত শ্রান্ত অইসব মানুষের মতন
ফুটপাতে রাস্তায় অলিতে-গলিতে
তাদের পাশে পৃথিবীর তীব্র তীব্রতর
কষ্টগুলোরে অনুভর করি কাছে গিয়ে।
নীল হলুদ ফুলের দেশ যখন ঝরে গেছে অঝোরে
মৌমাছি ভ্রমরীর গুঞ্জন উঠে গেছে
আকাঙ্ক্ষার উলঙ্গ হত্যার উল্লাসে।
তবুও বেঁচে আমি বেঁচে থাকা কেবলই,
অন্তঃস্থিত হৃদয়ের শুকপাখি বয়ে আনে,
এখন প্রেম নেই সেও নেই বন্দরে।
আমার মনিসৌধ সোপানের তীরে এসে!
আবার একটি নতুন পৃথিবী চাই
নতুন একটা মানুষ চাই খুব
সবুজ ঘাসের বিছানায় ঘুমাবো দু’জন
অন্তরীক্ষ বিষাদ যন্ত্রনা ভুলে যাবো মোরা!
আমাদের জীবন ব্যর্থতায় নিমজ্জিত
পথেঘাটে অঙ্গুরীয় নিমিষের ঠাঁই।
চোখ আছে তবুও পৃথিবী অন্ধকার,
আলো আছে সূর্যের দীর্ঘশ্বাসের অভাব
আজ সব কিছুই ছায়া কুহেলিকায় ভরদুপুর
সবারই সমবেত দাবি একটি আকাঙ্ক্ষার পানে।
ঢের স্বপ্ন আর রাত্রি কেটে গেলে পর—
যখন সজাগ হবো থরথর শরীরে—
মনে হবে মিছে পৃথিবীর মোহে,
না জানি কতকাল ফুরিয়েছে
পৌষের উপচে পড়া গভীর রাতে
কোনো এক মানবীর ছোট্ট ঘরখানায়।
একদিন পৃথিবীরে সত্যিসত্যি নির্বাসন দিতে হবে
ভাবতেই হৃদয়ে চিলিক মারিতেছে বিজলী।
সেই পৃথিবীর কল্যান মানুষের হাতে
তবুও আমরা দূরে থাকি স্কেচখাতা পাপে ভর্তি।
জীবন আমাদের ছুটি দেই,
আমরা বুঝি না তাহা অবোধ মনে,
এইদিন চলে যায়- চলে যায় বসন্ত এঁকে এঁকে।
কবে তার হৃদয় ভাঙন ধরেছে
অগ্নিতে জ্বলে উঠিতেছে বৃহৎ ব্যথা
এখন চোখে লঘু ঘুম ব্যথা তবু না কমে তার।
চলে যায় নীরবে নক্ষত্রের মত ধীরে ধীরে।
সবাই চলে যায় চারিদিকে ছুটে
ছলনাময় আকাশের নীচে
কে কাহার খোঁজ রাখে তীরে এসে।
সময় শেষ হলে পর দেখা যায়
কেউই কারো নয়- কেউই আপন নয়
বিধির ভূবনে মানুষ মানুষেরা।
তারপর যদি কোনো কথা মনে হয়,
হয়তো বা সে ছিলো- একদিন ছিলো,
আমার এ জীবনে ওতোপ্রোতো ভাবে জড়িয়ে
কবেকার কোন জনমের ভয়ংকর কথা এইসব!