তুমি তো সেই নারী জাতি
যে নারী করে নিকো মাথা নত
ফেরাউন, জাহেল, সাইবার পদতলে!
নক্ষত্র গায়নিকি সেই জয়ধ্বনি
ইতিহাস করেনিকি মানুষের কাছে প্রকাশ,
যুগে যুগে নারীর হুংকার সিংহের মত।
আছিয়া, মরিয়ম, সুমাইয়ার অভয়বাণী
এক আল্লাহ ছাড়া করি নাকো কাউকে ভয়!
মুসকান তুমিও তো সেই নারীর উত্তরসূরী
ওরা হোক না দলে অজস্র লোক—
ওরা মুখে বলে জয় শ্রীরাম—
আমরা বলিব ভয় ডরহীন আল্লাহু আকবর!
সাক্ষী কি হয়নি আরবের পাহাড়?
খোলা তরবারী হাতে মরিয়ম দাঁড়িয়েছে
শত-শত কাফেরের সম্মুখে।
সুমাইয়ার এক বাণী জীবন যাবে
ইসলাম পারিব না আমি কভু ছাড়িতে,
আরবের মাটি হয়েছিল রক্তে রঞ্জিত
মহিষী সুমাইয়া চলে গেল জান্নাতে!
মিশর রাজ্যকে স্তব্ধ করে দিয়ে
কালেমার মধুর বাণী পড়েছিল আছিয়া।
দেখেছিল সেইদিন ফেরাউন চোখে তার
নারীর অগাধ সাহসের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ!
আজও যদি থাকো নারী ইসলামের পক্ষে
তোমরাই হবে আগামীর শ্রেষ্ঠ নারী জাতি
ওরা মুখে বলে জয় শ্রীরাম—
আমরা বলিব ভয় ডরহীন আল্লাহু আকবর!
[প্রেক্ষাপট : ভারতের কর্নাটকের ছাত্রী মুসকান। ২০২২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারী, হিজাব নিয়ে ক্রমবর্ধমান তীব্র বিতর্কের মাঝে নিজের অজান্তেই ভারতীয় মুসলিম তরুণীদের ‘প্রতিরোধের প্রতীক’ হয়ে উঠেছেন মুসকান। ১৯ বছর বয়সী এই ছাত্রীর কলেজে প্রবেশ করার সময় একদল তরুণকে তার দিকে এগিয়ে আসতে দেখা যায়। হিন্দুত্ববাদ এবং হিন্দু জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীগুলোর সংশ্লিষ্ট রঙ ‘গেরুয়া’ শাল পরা যুবকরা ওই ছাত্রীকে ঘিরে ‘জয় শ্রী রাম’ বা ‘ভগবান রামের জয়’ স্লোগান দিতে থাকেন। মুসকান সেই সময় কালো দীর্ঘ গাউনের সঙ্গে হিজাব এবং মাস্ক পরে ছিলেন; গেরুয়া শাল পরা লোকজন অনবরত হেনস্তা করতে থাকায় ওই ছাত্রী দাঁড়িয়ে যান এবং পাল্টা ‘আল্লাহু আকবার’ স্লোগান দেন। কলেজ কর্তৃপক্ষ তাকে সেখান থেকে দ্রুত ভেতরে সরিয়ে নিয়ে যায়। মুসকানের এমন সাহসিকতা দেখে কবি তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে ‘নারীর গর্জন’ কবিতার জন্ম দেন।]