স্বাধীন করেছি দেশ
রক্তের দাগ যায় নিকো মুছে?
তিরিশ লক্ষ্য তাজা ফুলের!
পৌষের ক্ষেত ভরা সোনালী ধানের মতো
ভেসে আসে দখিনা বাতাসে রক্তের দহন!
একাত্তরের যন্ত্রণার চিতা নিভেনি আজও
স্রোতের কল্লোলে ধরা দেয় জোছনায় দুধে!
চিতা জ্বলে আজও একুশের চেতনায়
একুশের চিতায় বহু মানুষের ডল;
হতাশার এক দুম্র ঘ্রাণ —
নিরবতার রাত্রি বয়ে যায়
আজিকের এই মিনার প্রান্তে!
আমরা এনেছি স্বাধীন দেশে শান্তির হিমাদ্রি‚
দরিদ্র ভুমিহীন মানুষের অই চোখে মুখে
ভালোবাসার একচ্ছত্র হাসি দেখবো বলে!
কিন্তু আজ দেখি স্বাধীন বাংলায়
দরিদ্রের কেঁদে কেঁদে ফিরে চাওয়া‚
পায় নাকো দু’মুঠো আহার পেটপুরে!
কতো যে হতদরিদ্র মানুষ শুয়ে আছে অন্ধকারে
নীল আকাশের নীচে ফুটপাতে!
আমি কথা বলি বাংলায়—
কি এক মধুর ভাষায়?
তবু বুঝি নাকো পথহারা অনাথ শিশুর চিতকার!
শুনি এক দুখিনী মায়ের আত্মনাদ
এ ধ্বনি যেন আকাশ পাতাল ফেড়ে নেয়!
শান্তি নাই কোথাও শান্তি নাই!
এটাই কি আমার সোনার বাংলা?
তিরিশ লক্ষ্য রক্তের দাগ যায় নিকো মুছে
চেতনার সপ্রতিভ হতে এখনো!
কবে এক শান্তি সুখের জন্যে করিয়েছি যুদ্ধ!
এনেছি এক স্বাধীন দেশ বুকভতি রক্ত ব্যয় করে;
হইয়াছে বিশ্ব মানচিত্রে হইবার মতো একখানি দে-শ!
তবু নেই কোটি প্রাণের হৃদয়ে শান্তির ঘ্রাণ!