আমাকে পাওয়ার পর তুমি নাকি সম্পূর্ণ পাল্টে যাবে
যেমন শ্রাবণের কালো মেঘ কেটে গিয়ে
দীর্ঘ আকাশ জুড়ে সব পরিবর্তন হয়ে যায়!
যেই পথে আমি আসি নাকো সেই পথেই শুনবে
আমার পায়ের শব্দ হুড়মুড় করে;
এবং কেঁপে উঠবে তোমার ভিতরের নীলবন্দর
তোমার সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গ শীরশীর করে।
কিছুক্ষণ পরেই আবার পুনরায় স্তব্ধ হয়ে যাবে
তোমার শরীরের উত্তেজিত সব রক্ত;
যেমন নীলিমার ক্ষিপ্র চিল যেই ভেগে নেমে আসে
ক্লান্ত পাখনায় পৃথিবীতে নিথর দেহ নিয়ে!
আমাকে পাওয়ার পর তুমি নাকি সম্পূর্ণ পাল্টে যাবে
প্রতিটি মুহূর্তে তোমার চিন্তা ধারায় আমি থাকবো,
কল্পনায় ভেসে রবে আমার এ্যালবাম,
কিন্তু তোমার সেই কল্পনায় আমাকে একটু ছুঁতে গিয়ে
পরক্ষণেই অদৃশ্য হয়ে যাবো আমি।
তখন তোমার হাসিমাখা মুখে নেমে আসবে
একরাশ মলিনতার ছাপ ছুঁতে না পেরে!
আমাকে পাওয়ার পর নাকি তোমার হৃদয়ে
শুরু হবে নতুন এক জগত?
যেখানে তুমি একটি সুন্দর করে ঘর তুলবে।
ঘরের একপাশে একটি জানালা থাকবে,
যেখান থেকে রাত্রির অজস্র নক্ষত্র দেখা যায়,
আমাকে খুঁজে বের করবে তাহাদের ভিতর থেকে!
তোমার নরম শাদা হাত আমার মাথায় বুলিয়ে দিবে
আমাকে গুনগুনিয়ে শুনাবে মৃদু ঠোঁটের গান;
তুমি নাকি অনন্তকাল দাঁড়িয়ে থাকবে
নক্ষত্রের নীচে যদি আমায় খুঁজে না পাও;
এইসব সবই ছিলো তোমার মনের আশা আকাঙ্ক্ষা!
তুমি ভুলে যাবে তোমার অতীতের সব ব্যথা বেদনা
যেই কষ্ট জন্মেছিল শিশিরের মতো বুকে এসে।
আমাকে পাওয়ার পর সেইসব সবই ঝরে যাবে
ফিরে পাবে নতুন এক অনিন্দ্য প্রাণ!
আমাকে পাওয়ার পর তুমি নাকি সম্পূর্ণ পাল্টে যাবে
এক একবার মনে হবে এই পৃথিবীতে
তোমার থেকে দ্বিতীয় সুখী মানুষ আর কেউ নাই।
মনের অগাধ আবেগে মনে হবে
কখনো সখনো শঙ্খচিল হয়ে সাঁতরাই;
অই আকাশের সমস্ত নীলে ঘুরে ঘুরে দিনমান
দুই ডানা উজাড় করে।
বেশ খানেক কবিতা লিখবে নিঝুম রাত্রি ভরে
প্রতিটা ছন্দে আমার নাম থাকবে,
সবটুকু ভালোবাসা নিঙড়িয়ে লিখবে,
তোমার আসন্ন কবিতার প্রতিটি পাতায় পাতায়
পদ্মফুলের মতো ভেসে রবে আমার ছবি।
শতাব্দীর পর শতাব্দী ফুরিয়ে যাবে
তবুও যেন তোমার কবিতা লেখা শেষ হবে না
আমাকে পাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা নিয়ে!