১)
তোমারে দেখিয়েছি করুণ চোখে আত্মতৃপ্তিতে—
তারপর কতোদিন কেটে গেল রাত্রিদিন
হতাশায় নিরাশায় পাই নিকো জীবনের ভীড়ে!
কোথায় গিয়েছ কোনদিকে জানি নাই আমি
হৃদয় পেয়েছে ব্যথা মলিন হয়েছে চক্ষু,
পৃথিবীর পথে নিঃসঙ্গতার সাথে করিয়েছি সহবাস
এই রাত্রিদিন ফুরিয়ে এলো কতোবার,
কতো রমণীরা এলো গেলো হাত ছুঁয়ে ছুঁয়ে
তোমার প্রতীক্ষার নিকট এক ফিরায়ে দিয়েছি সব।
শার্ট খুলে আকাশের নীচে বসে আছি
ঘাসের শরীর ঘেষে শুয়ে আছি—
তুমি ফিরে এসো সখী এইখানে আমার কাছে!
তোমারে দেখিয়েছি করুণ চোখে আত্মতৃপ্তিতে—
তারপর কতোদিন কেটে গেল রাত্রিদিন
হতাশায় নিরাশায় পাই নিকো জীবনের ভীড়ে
ঝরে গেছে হলুদ ফসল, মরে গেছে এই মাঠ!

২)
আজ তুমি চাও না আমারে তোমার হৃদয় থেকে
জানি তোমার শরীর অন্য কারু পিপাসায় ভরে
আমার গভীর ভালোবাসা আজ ভুলে গিয়ে
সেই ভালোবাসা তুমি করিয়েছ কারে দান!
কে বা সেই লোক তোমার যৌবন মিটায়।
আমি এই ভরদুপুরে বসে আছি একা আজ
কোথাও দু’দণ্ড সান্ত্বনার স্থিতি নাই—
পৃথিবীর অন্ধকারে আমারও হৃদয় বদির
সেই কবে কখন থেকে দেখিতে যদি তুমি এসে!
গভীর ঘুমে চোখ চায় না জড়াতে—
এলোমেলো রয়েছে বাহিরের আকাশ
নক্ষত্রের জয়গান জোছনার ভীড়ে এসে।
তারই নীচে আমাদের নিত্য বিরহ ফুঁসে ওঠে।
পৃথিবীর সব পথ শেষ হয় আমাদের থেকে
কেটে যায় এঁকে এঁকে তবু রাত্রিদিন—
উচ্ছৃঙ্খল বিশৃঙ্খল জীবন তারই সুরে ফুরায়!

৩)
জানি তবু আমার মরণ হবে তোমার অনেক আগে
চলে যাব আমার ভালোবাসা তোমার কাছে রেখে,
তারপর কতো শত শতাব্দী ফুরিয়ে যাবে
সমুদ্রের ঢেউ খেলে যাবে মানুষের পায়ে পায়ে
রাত্রির আকাশে আরও দ্বিগুণ নক্ষত্র জ্বলে যাবে
অনেক রাত্রি ভরে নক্ষত্র অন্ধকারে পৃথিবীতে।
(যদিও তোমারও একদিন মরণ আসিবে
গভীর ঘুমে ঘুম পড়াতে চুপেচাপে ঠিকই)
আমি থাকবো না তবু পৃথিবীর ভাষা রয়ে যাবে
পৃথিবীতে তোমার পিপাসা কোনোদিন ফুরাবে না।
মৌমাছির গুঞ্জনে কেউ বা আসিবে হায়
আমার প্রেম বিক্রিত হবে সেইদিন নীরবে!
অন্য প্রেমিকের দৃষ্টি রহিবে তোমার কাছে
তোমার শরীর ভালোবেসে বিছানায় শুয়ে রবে
এই পৃথিবীর রাত্রি আর দিন সাক্ষী হবে
আলো বাতাস ছুঁয়ে যাবে তোমার চক্ষু শীতল করে!

৪)
যখন কেউ ছিলো না আমি ছাড়া তোমার পাশে
আমারে তুমি খুঁজিয়া ছিলে সেইদিন আপন ভেবে,
আগলিয়ে রেখে ছিলে হৃদয় ভরে সর্বক্ষণ।
আলো জ্বলে তারপর নিভে যায় অন্ধকারে
চোখের আড়ালে সূর্য তবু সেই অপেক্ষার প্রভাত—
আমি জানি পৃথিবীর এই প্রেম ভালোবাসা
রাত্রির নক্ষত্রের মতোন প্রতিদিন জেগে উঠে না
হৃদয়ে ব্যথা জমে তারপর নিঃশেষ হয়!
আজও পথে পথে দু’পায়ের চিহ্ন মুছে গিয়ে
তুমি হারিয়েছ কবে একদিন আমার থেকে
তবুও হৃদয়ের রেখা রয়ে গেছে ধুলোর অক্ষরে!
আজ যদি আমি মৃত্যুর সাথে চলে যাই
তুমি করিবে না স্মরণ একবারও কাছে এসে।
আমি জানি পৃথিবীর এই প্রেম ভালোবাসা
রাত্রির নক্ষত্রের মতোন প্রতিদিন জেগে উঠে না
হৃদয়ে ব্যথা জমে তারপর নিঃশেষ হয়!

৫)
আজ তুমি চলে যাও আমারে ছেড়ে নিঃশব্দে
তার আগে হৃদয়ের ব্যথায় মৃত্যু আসে!
ভুলে যাব তবু হয় নাকো ভুলে থাকা আজও
কেবলই হৃদয় নাড়াচাড়া দিয়ে যায় স্মৃতির পাতা।
এই রাত্রি, এই দিন কতো স্মৃতি রেখেছিলে ভরে
আজ তাই ফিরে আসে বাতাসের বেগে,
আমি তোমারে যেই ভালোবাসা দিয়েছি
কখন গিয়েছে সেই তোমার অবহেলায় ভেস্তে!
জীবন ফুরিয়েছে এই রাত্রির মতোন সেই কবে
তবুও কতো ভালোবেসে যাই আমি একাকী,
কোনো এক পাখির কণ্ঠে মনে হয় তুমি আছো
ডাকিতেছ আমারে বারেবারে হৃদয়ের পর্দা তুলে!
আজ তুমি চলে যাও আমারে ছেড়ে নিঃশব্দে
তার আগে হৃদয়ের ব্যথায় মৃত্যু আসে!
ভুলে যাব তবু হয় নাকো ভুলে থাকা আজও
কেবলই হৃদয় নাড়াচাড়া দিয়ে যায় স্মৃতির পাতা।

৬)
আজ যদি মরণ এসে আমারে নিয়ে যায়
আমি জানি; আমার কবরের পাশে তুমি যাবে না।
নক্ষত্রের সময় ফুরিয়ে যেই মৃত্যু হয়
একদিন আমারও সময় ফুরিয়ে মৃত্যু হবে
আমারে খুঁজিতে তবু আসিবে না কোনোদিন!
এখন আমি এই বর্তমান পৃথিবীর বিলুপ্ত কঙ্কাল
কোনো কিছুই আজকাল আমারে তাড়াতে পারে না
শূন্য হৃদয়ে যত গ্লাণির সঞ্চয় খরিদ করিয়েছি—
তোমার অবহেলায় কবে থেমে গেল আমার পথ চলা
জানি তবু তোমার পথ চলা থেমে নাই,
তোমার গান আজ পৃথিবীর ঢেউয়ে ভাসে
হৃদয়ের ব্যথা মুছে বাতাসের উপর বাতাসে!
আজ যদি মরণ এসে আমারে নিয়ে যায়
আমি জানি; আমার কবরের পাশে তুমি যাবে না।
কোনো অনুভূতি তোমারে স্পর্শ করিবে না
পৃথিবীর সুখে তোমার শরীর বিছিয়েছ কবে!

৭)
তুমি যদি অপেক্ষা করিতে আমার জন্য তবু এই
সমুদ্রের পারে দু’পায়ের দাগে ভালোবেসে
পথ চলার পিপাসা কুড়িয়ে এনে স্বস্তিতে আমি
সহস্র প্রেমের উপমা খুঁজে তোমারে লইতাম বুকে টেনে!
আমারে ভালোবাসো এই কথা বুকে গেঁথে
কেন তুমি হারিয়ে যাও আমারে একাকী রেখে।
আমারে যদি রাখিতে আগলিয়ে তুমি এসে
পৃথিবীর সব বাঁধা উপড়ে তোমার দু’হাতে তুলে দিতাম
এ জীবনের সবটুকু নির্যাস অনন্ত অসীম ভরে!
কিন্তু তুমি সেই কবে ফেলে চলে গেছো
তবু কেন আমি তোমার প্রতীক্ষার প্রহর গুনি!
রাত্রির নক্ষত্র আমাদের আকাশে কতবার এলো গেলো
তবু তুমি যদি অপেক্ষা করিতে আমার জন্য এই
সমুদ্রের পারে দু’পায়ের দাগে ভালোবেসে
পথ চলার পিপাসা কুড়িয়ে এনে স্বস্তিতে আমি
সহস্র প্রেমের উপমা খুঁজে তোমারে লইতাম বুকে টেনে!

৮)
একদিন তুমি আমার এ পথে ছিলে কতো আবেগে
তখন তোমার পথ চলার কেউ ছিলো নাকো
আমি জানি সেইদিন তুমি এসেছিলে নিকটে।
কত ভালোবেসেছিলে নিয়েছিলে কাছে
তারপর কাহারে তুমি খুঁজিয়া পেলে—
ভুলে গেলে আমারে সব সম্পর্ক তুলে নিয়ে!
যেখানে যাই খুঁজে ফিরে চেয়ে থাকি
শত মানুষের এই সমুদ্রের নক্ষত্রের ভীড়ে
একটু প্রেম হৃদয়ের জ্বালা আসান হবে ভেবে
তবু অতীত দগ্ধ হয়েছে তোমার কাছে!
একদিন তুমি কত কথা বলছিলে সেইদিন তবুও
আজ আমি পরবাসী মানুষের সভ্যতায় মিশে গেছি
তুমিও ডাকনি আর আমিও ফিরিনি কাছে।
একদিন তুমি আমার এ পথে ছিলে কতো আবেগে
তখন তোমার পথ চলার কেউ ছিলো নাকো
আমি জানি সেইদিন তুমি এসেছিলে নিকটে।

৯)
চেয়েছো একদিন তোমার দু’চোখে কতবার আমাকে
রাতে বিরাতের আলোয় তোমার শরীরের ঘ্রাণ
আজও আমি তোমারে সেই সশকে খুঁজে বেড়াই।
যেইদিন ছিলো নাকো তোমার কেউ কাছের
সেইদিন বন্ধু হয়ে রয়েছি নিকটে নিকটে—
আজ আমি ক্লান্ত শ্রান্ত দেহ নিয়ে এই দূর দিগন্তে
যেখানে মানুষ নাই কোনো দাঁড়ায়েছি তার তীর ঘেঁষে।
জীবনের মানে সুখ নেই পায়ের তলায় সেই মাটি
আজ আমি হারায়ে গিয়েছি তোমার থেকে
চিরকাল আমি কলমির শুকনো পাতার মতো!
গভীর নিদ্রায় জড়িয়ে এক শতাব্দীর জঞ্জাল নিয়ে
ঘুমিয়ে যাই যদিও মাঝরাতে মনে হয় তুমি
আমারই আছো হৃষ্টপুষ্টে হাড্ডি মাংসের মতো মিশে—
পরক্ষণেই হৃদয়ের ব্যথায় মৃত্যু আসে কি ভেবে?
আজ যদি মরণ এসে আমারে নিয়ে যায়
আমি জানি; আমার কবরের পাশে তুমি যাবে না।

১০)
তোমারে দেখিয়েছি করুণ চোখে আত্মতৃপ্তিতে—
তারপর কতোদিন কেটে গেল রাত্রিদিন
হতাশায় নিরাশায় পাই নিকো জীবনের ভীড়ে!
কোথায় গিয়েছ কোনদিকে জানি নাই আমি
হৃদয় পেয়েছে ব্যথা মলিন হয়েছে চক্ষু,
পৃথিবীর পথে নিঃসঙ্গতার সাথে করিয়েছি সহবাস
এই রাত্রিদিন ফুরিয়ে এলো কতোবার,
কতো রমণীরা এলো গেলো হাত ছুঁয়ে ছুঁয়ে
তোমার প্রতীক্ষার নিকট এক ফিরায়ে দিয়েছি সব।
শার্ট খুলে আকাশের নীচে বসে আছি
ঘাসের শরীর ঘেষে শুয়ে আছি—
তুমি ফিরে এসো সখী এইখানে আমার কাছে!
তোমারে দেখিয়েছি করুণ চোখে আত্মতৃপ্তিতে—
তারপর কতোদিন কেটে গেল রাত্রিদিন
হতাশায় নিরাশায় পাই নিকো জীবনের ভীড়ে
ঝরে গেছে হলুদ ফসল, মরে গেছে এই মাঠ!