বৃদ্ধাশ্রম
///////////
নটু কাকা ভালো মানুষ
নামের খ্যাতি প্রতি ঘরে ঘরে।
তিন কূলেতে কেউ নাই মা বেটা ,
দুয়ে মিলে থাকে মাটির ঘরে।

বর্ষার জল নব আনন্দে
ভরছে  খানা খন্দে,
তাইনা দেখে নটু কাকা
নাচছে খুশির আনন্দে।
নেচে নেচে বলছে কাকা
আজকে ভীষণ খুশির দিন
বর্ষা এবার হচ্ছে ভালো
ফিরবে মোদের সুদিন।

চাষ হবে ফসল হবে,
ভরবে আবার গোলা।
খুশির ভারে চেঁচিয়ে বলে
বুঝলি কিছু ভোলা?
ভোলা,অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে
নাটু কাকার দিকে।
তিড়িং বিড়িং নেচে বেড়ায় কাকা,
যেন ছুটছে খুশির রথে।

দশ দিন হল বৃষ্টি গেল বেড়ে,
চারিদিকে থৈথৈ,
কাকার খুশি গেল উড়ে
চারিদিকে জল যে অথৈ।
ঘর ডুবলো,পুকুর ডুবলো,
ডুবলো উঠান ,গোলাঘর,
চারিদিকে হৈ চৈ চেঁচামেচি,
প্রাণ বাঁচানোর কান্নার কলরব।

বারি ধারায় ডুবছে গ্রাম,
অশ্রু ধারায় কাকার প্রাণ
সাধের গবাদি পশু যাচ্ছে ভেসে
আশি ছুঁইছুঁই মা দাওয়ায় বসে,
কাকে ছেড়ে কাকে রাখবে কাছে?
কাকা কেঁদে কেঁদে দাঁড়িয়ে থাকে।

দমকা হওয়ায় পড়লো ঘর,
ক্ষণিক পরে উঠলো ঝড়,
জলের তোড়ে মা গেল ভেসে
কাঁদতে কাঁদতে কাকাও গেল শেষে।

চার দিন পর দেখা মেলে
কাকার দেহ ঝুলছে ডালে
সবাই ভাবলো মরে গেছে
ভয়ে ভয়ে নামিয়ে দেখে
ধিকি ধিকি চলছে জান
ফিরে পাবে কাকা প্রাণ?
সবার মনে প্রশ্ন জাগে
কাকার জায়গা হলো ত্রাণ শিবরে।

তিন চার দিন পরে বলল কাকা
মা কোথায় জানিস?
ত্রাণ শিবিরে খুঁজে দেখ
দেখতে পেলে আনিস।
মায়ের কথা ভেবে ভেবে
হাঁপিয়ে হাঁপিয়ে উঠে,
মায়ের সাথে হলোনা দেখা
প্রাণটা গেল শেষে।

তিন  মাস পরে খবর এলো
দূর দেশি এক গ্রামে
কাকার মা বেঁচে আছেন
আছেন বৃদ্ধাশ্রমে।