এক দুই তিন গত হয় দিন
আসে ঋতু যায় সাল,
পিতা-মাতা হারা এতিম ছেলেটি
বুনে চলে মায়া জাল।
পাড়ার ছেলেরা বিবাদ ভুলে
বাড়ায়ে দিয়েছে হাত,
দু:খ তখন সুখ হয়ে যায়
পোহায় তিমির রাত।
কাঁধে কাঁধ মিলে পাল্লা দিয়ে
সমাজের ভালো কাজ,
ছোট্র ছেলেটি সবার সেরা
দুষ্টরা পায় লাজ।
এমনি ভাবে চলছে গাড়ি
পালা বদলের দিন,
যৌবন এসে উঁকি-ঝুঁকি মারে
চারিদিকে বাজে বীণ।
অনেক কষ্টে চাপা দেওয়া ছিল
পিছনের শত কথা,
আস্তে আস্তে উঠিল জেগে
পুরোন ক্ষতের ব্যাথা।
মা মা বলে ডুকরে কাঁদে
বাবা তুমি গেলে কই,
পাড়া পড়শি বেঁধেছে জমাট
চারিদিকে হইচই।
টুনির মা বুকে টেনে তুলে
মাথায় বুলায় হাত,
আজ হতে তুই আমার ছেলে
বাড়িতে কাটাবি রাত।
পাঁচ যুগ ধরে সংসার করি
ছেলে মেয়ে ছাড়া ঘর,
এতদিন পর তিনি তোরে দিলেন
তুইকি আমার পর।
বেটা বেটা বলে কেঁদে কেঁদে কয়
মুছায়ে চোখের জল,
পাশেতে দাঁড়ানো টুনির বাবা
চোখে জল ছলছল।
কিশোর ছেলেটি মনে মনে ভাবে
কোথায় আল্লাহ তাআলা,
কি করিব আমি বলে দাও তুমি
কোনটা হবে ভালা।
বুকেতে জড়ায়ে টুনির বাবা
মাথায় বুলায় হাত,
আল্লাহ্ দিয়েছে কিসের চিন্তা
আমারে কাটাবি রাত।
চাকরের বেশ ছুড়ে ফেলে ধর
আমার ছেলের বেশ,
আজ হতে তুই নবাব পুত্র
গোলামী জীবন শেষ।
বাড়ির মালিক নিরবে দাঁড়ায়ে
মায়া ভরা চোখে চায়,
সত্যইতো নবাব পুত্র
কোথায় ছিলরে হায়!
অনেক দিয়েছো আমারে তুমি
গড়েছ অনেক কিছু,
খাটিয়ে নিয়েছি তোমারে দিয়ে
অযথা নিয়েছি পিছু।
বিদায় বেলায় কিবা তোরে দেই
হিসাবে অনেক হয়,
দশ বিঘা জমি দিলাম লিখিয়া
তাতেই হবে জয়।
কস্ট দিয়েছে আমার ছেলে
তবুও রেখেছ মান,
মাফ করে দিও বিদায় বেলাতে
বাবা জাহিদ হাসান।
ধনির দুলার কাঙালের বেশে
কাটালো শৈশব কাল,
যৌবন কালে নতুন ভাবে
বাঁধিল মায়া জাল।
পিতা-মাতা হারা কতই শিশু
কোথায় যে চলে যায়,
অতল তলে তলিয়ে কেউবা
কিনারা খুঁজিয়া পায়।
সমাপ্ত