তাল গাছ ঋজু অতি উন্নত শির,
ইস্পাত দৃঢতায় নিজ লক্ষ্যে স্থির।
পাখি তার শাখায় বসে করে বিশ্রাম,
নিজেকে বিলিয়ে সেবা দান করে অ-বিরাম।
ফল তার করে ভোগ পশুপাখি, মানব কুল,
কলি থেকে কাঁচা পাকা বলিনি ভুল।
কলি কেটে রস তার করে সংগ্রহ,
ভুলবে না স্বাদ,আস্বাদ যদি লয় কেহ।
মানব কুল একা নয় মৌমাছিগণ,
রসনায় রস নিয়ে করে মধু আহরণ।
তাল রসের মাদকতা সবারই জানা,
রসিয়ে রস বেশি খেতে আছে মানা।
তাল বড় হলে পরে বলে তাল শাঁস,
তাল শাঁস অতি মজা খেতে অভিলাস।
পাকা তাল আরো মজা বের কোরে জুস,
তাল বড়া পিঠাপুলি না খেলে আফসোস।
জুস রেখে তালের আঁটি মাটি চাপা দাও,
নবাঙ্কুর ভেঙ্গে শাঁস বের করে খাও।
স্বাদেতে অপূর্ব ওই আঁটি ভাঙ্গা শাঁস,
একবার খেলে আবার খেতে জাগে আশ।
তাল গাছের গুনের কথা কত বলব আর,
তালপাতা সাক্ষী দেখো মানব সভ্যতার।
সভ্যতার আদি লগ্নে কাগজ ছিল নাকো,
দূর করেছে কাগজ অভাব মিউজিয়ামে দেখো।
উত্তর পুরুষ আমরা যারা হয়েছি মডার্ন,
ভুলতে কি পারবো পূর্বসুরির জ্ঞানের অবদান?
তাদের জ্ঞানেই ভর করে আমরা উন্নত,
তাল পাতা-ই বার্তাবাহক বলব আর কত।
তালপাতার আসন আর তালপাতার পাখা,
আজকের দিনে গেছি ভুলে যায় না আর দেখা।
তালের নৌকা তালে তালে বায় না আর নেয়ে,
তালগাছ রক্ষে মোদের, বাতাস আসলে ধেয়ে।
তালে তালে তালের কথা আরো কিছু কই,
তাল গাছেতে বাসা বাঁধে ছোট্ট বাবুই।
সারাদিন কিচির মিচির মিষ্টি মধুর সুর,
দু দণ্ড দাঁড়িয়ে দেখ ক্লান্তি হবে দূর।
তবে ভাদ্র মাসে তালতলাতে যেও নাকো ভাই,
বজ্রপাতের সময় কিন্তু দূরে থাকা চাই।
ভাদ্র মাসে পাকা তাল পরে দাড়াম করে,
দূরে তুমি থেকো সরে মাথা রক্ষা করে।
বজ্র কালে তালগাছ মাথা পেতে রয়,
নিজে জ্বলে অঙ্গার হয়ে আমাদের বাঁচায়।
তাল গাছের মতো হও ঋজু স্বভাব,
পর হিত তরে ভোলো নিজের অভাব।।