নবারুন হতে অস্ত গমন
সুদূর নীলিমায় মুক্ত পতগের ন্যায় বিচরণ
আত্ম শৈশব,এক মধুর স্মৃতি।
গৃহ পশ্চাতের সর্পিল মেঠোপথ;ধাম সংলগ্ন শাকম গাছ; সরুখাল;
সম্মুখের পড় পড় বাবলা গাছ-স্মৃতিময় সর্বত্র
আত্ম-শৈশব।
নবগজিত পাটের ক্ষেত্রে দস্যু হানার ন্যায়
বিস্তর গোল্লাছুট;সুতার কান্ধা হাতে অবাধ্য ঘুড়িকে শাসন;
দুরন্তে ঢেলা ছোড়ার প্রতিযোগিতা-কতকগুলো রঙ্গিন পৃষ্ঠার সমাহার
আমার শৈশব!
কাল বৈশাখীর প্রলয়ে অদূরে অস্থির ফজলী আম বৃক্ষটির
সহসা অকৃপণ হওয়া;
দল বাধিয়া তড়িৎ বেগে সেথায় ছুটে যাওয়া;আম কুড়াইবার ধুম-
আমার শৈশব ।
সাঝ-বরষায় বজ্রপাতের হুঙ্কারে
গৃহকোণে বাবার সহিত সমস্বরে কালিমার উচ্চারণ;
বৃক্ষশাখা ভঙ্গের মটমট শব্দে জড়সড়;উচ্ছৃঙ্খল ঝড়ের উদ্দমতা;
চমকিত বিদ্যুতের প্রভায় লন্ডভন্ড প্রকৃতির দর্শন-
আমার শৈশব।
আকাশ বন্যার ঠেল পানিতে তলিত
বিস্তর ফসলী জমি;দৃষ্টি সীমার সর্বত্র শুধু
শান্ত জলরাশি;ধান এবং হলদি ক্ষেতের ফাঁকে ফাঁকে
থোপা নাচিয়ে মৎস্য আহরণ;বর্শা ছড়ানো;দিবসব্যাপী
দেখভাল;কলার ভেলায় সুদূরে হারিয়ে যাওয়া;ডুব ফোড়ার আয়োজন
আত্ম শেশব, সেসব এক মধুর স্মৃতি!
আত্ম-শৈশব, প্রানবন্ত সরিষা ফুলের সমাহার;
খেজুর বৃক্ষে ঝুলমান পেড়ামাটির খোপ;গমের ক্ষেত্রে
বেতোশাক তোলার উৎসব;মাঠে মাঠে গবাদি পশুর চরণ;
অসংখ্য প্রতিযোগির সহিত গুলতি ছোড়ার স্মৃতি
কতকগুলো অমলিন পৃষ্ঠা।
রমজানের প্রত্যহ গৃহ আঙ্গিনা-
মার্বেলের শব্দে মুখরিত;হৈ চৈ কোলাহল দিবসভর
মায়ের বকুনিতে চৈতন্যোদয়;দিগন্ত হতে দিগন্তে এশার আজানের
ধ্বনিত সুর;পার্শ্বগৃহের দাদুর হাতে চিরচেনা কালিপড়া হারিকেনে
মসজিদে গমন;দল বেধে গৃহে ফেরা-
আত্ম শৈশব,মধুর স্মৃতি এক।
আত্ম-শৈশব,লোমহর্ষক ভূত-প্রেত আর দেও-দানবের গুজব,
শিয়াল পন্ডিত,ঝুটকি বুড়ি শ্রবণের অফুরন্ত অভিলাষ,বাহিরে
শিয়ালের সম্মিলিত হাঁক,স্বর্গতুল্য মাতৃ-ক্রোড়ে জড়সড় নিদ্রার
মধুর অভিজ্ঞতা,অসংখ্য স্মৃতির সীমাহীন সমাহার
আত্ম-শৈশব.........