এই যে আমার রক্তজবার ভিজে-ওঠা দু’চোখ,
কে দেখেছ কবে কাঁপে নির্বাক শোকের শ্লোক?
ভাঙছি কেন বারেবারে, গড়ছি কেন শূন্য?
ছুঁয়ে দেখি আয়না, তবু মুখটা লাগে ভিন্ন।

এই যে আমার হাসির কণ্ঠ গাইছে গান অনর্গল,
কে দেখেছ কখন শুনি নীরব যন্ত্রণার দল?
উদযাপনে মিশে থাকি, তবু নিঃসঙ্গ রাতে—
জানতে যদি কেমন লাগে নিঃশব্দ অভিশাপে!

কে দেখেছ কাঁটার মুকুট কপালে দিয়ে রাখি?
সবাই ভাবে রাজা আমি, জানে না কেমন থাকি।
আমার ছায়ায় দাঁড়িয়ে কেউ শীতলতা পায়,
আমার ভেতর দগ্ধ কাঠের দাউদাউই দায়!

এই যে আমার বজ্রহাসি, বাজছে তালে-তালে,
শুনতে যদি পারতে ভেতর ছিন্ন তারের জলে!
জীবন আমার মঞ্চের খেলা, সংলাপ নিখুঁত তথ্য,
একলা ঘরে পোড়া ধূপের অন্ধকারই সত্য!

এই যে আমার খ্যাতির মুকুট, স্বর্ণের আলো ভ্রষ্ট
কে জানে তার ভেতর কত ক্ষত আর নরম কষ্ট?
বুকের নিচে পাথর বাঁধা, স্বপ্ন আমার কারাগার,
কে শুনেছে কান্না আমার বিজয়মালার ভিতর?

জিততে গিয়ে হেরেছি কত, কে জানে সেই গোপন?
তুমি দেখেছ আগুন শুধুই, ছাইটা দেখেছ কখন?