দুঃখ ভরা এক জলে আমি গা ডুবিয়ে ছিলাম।
তোমরা আমায় দেখতে এলে, কেউ প্রশ্ন করেছিল-
“কেন এমন নিঃশব্দের চাদর জড়ালে তুমি?”

আমি মুখ বন্ধ রেখেছিলাম, বলতে পারিনি-
পৃথিবীর কোলাহলে কান পাততে গিয়ে
শুনেছিলাম অদ্ভুত কিছু কষ্টের কথা।
যেখানে আকাশ কাঁদে পাখির ডানায় ঘর্ষণে,
যেখানে নদী শুকিয়ে যায় মানুষের অমানবিকতায়।
সেখানে গাছের শেকড় তৃষ্ণার্ত হয়ে বলে,
“পানি চাই না, কেবল একটু ভালোবাসা ফিরিয়ে দাও।”

তোমরা যখন হেসেছিলে,
আমার বুকের গহীন অন্ধকারে অদ্ভুত এক শপথ জন্ম নেয়।
পরের জনমে স্রষ্টার কাছে নালিশ জানাবো-
তোমরা হবে বাতাস, আর আমি হবো এক গভীর শীতল রাত।
আমি তোমাদের কাঁধে জড়িয়ে দেব জমে থাকা কুয়াশার বোঝা,
যতক্ষণ না তোমরা শিখছ, কীভাবে বিন্দু বিন্দু উষ্ণতা ফিরিয়ে দিতে হয়।

যদি একদিন এই নিয়তির কাহিনি পাল্টে যায়,
আমি স্রষ্টাকে বলবো আরও একবার,
তোমাদের তৃষ্ণার্ত করে দিও, আর আমি হবো কৃপণ মেঘ।
যতক্ষণ না তোমরা উপলব্ধি করো নদীর বেদনা,
ততক্ষণ তোমরা শুনতে থাকবে শুকনো পাখির চিৎকার।

তবু যদি না শিখো,
আমি হবো সহ্য করে চলা পরিত্যক্ত মাটি।
তোমাদের পদচারণে বিপন্ন হয়ে বলতে থাকবে-
“তোমরা বুঝতে শিখবে কখনও?”

তোমাদের চিৎকার আর চোখের নীরব জল দেখে একদিন
আমি নিশ্চিন্তে বিদায় নেব, ফিরে যাবো চাঁদের কাছে।
কিন্তু সেই সময়ে তুমিই আর্তনাদ করে বলবে,
“এই নিষ্ঠুরতাই ছিল তোমার প্রতিশোধ?”

আর আমি একাকী, এক নতুন ভোরে হেসে বলবো-
“আমি শুধু তোমার বোঝার জন্য রচনা করে গেছি গল্পের মতো জীবন।”