হরিনাথ ঘড়ি হাতে- ইশকুলে যায়
ক্লাশ শুরু হবে তার ঠিক দশটায় ||
যেতে যেতে ঘড়ি দেখে, দেখে আশপাশ;
পুকুরেতে খেলা করে ক’টা রাজহাঁস!
“এক, দুই, তিন, চার...নয়, দশ..বারো
ওপারেতে ছয়খানা যোগ করি আরো!
ক’টা হলো? ক’টা হলো?” গোনে আঙ্গুলি!
স্নান ঘাটে তখন আসে নিবারণ ঢুলি||
“কী..রে হরি, কি গনিস? হাঁসগুলি কার?
ধরবি কী কোনটারে? জলে দে সাঁতার!”
“না গো দাদু ধরবো না, যাই ইশকুলে!”
আবারও সে ঘড়ি দেখে হাতখানা তুলে ||
হরিনাথ ঘড়ি হাতে- যায় ইশকুলে-
মৌমাছি মধু নেয়, দেখে ফুলে ফুলে!
“ইসসিরে! আমি হরে পরে মৌমাছি
ফুলে ফুলে করতাম কত নাচানাচি!”
মৌমাছি মধু নিয়ে ছোটে মৌ-চাকে!
হরিনাথ সেইদিকে চোখ মেলে থাকে!
“কীরে হরি! কি দেখিস আসমানে চেয়ে?”
হঠাৎ পিছনে কেউ ওঠে জোরে গেয়ে!
পশ্চাতে ফিরে দেখে- যেন এক ডাকু!
লাল লাল চোখে চেয়ে শিবরাম কাকু!
“মৌমাছি যায় উড়ে, দেখছি গো তাই,
আর নয়! এই আমি... ইশকুলে যাই”||
বটের তলায়... এক শালিকের ছানা;
উড়তে পারে না সে মেলে দুটি ডানা!
চ্যাঁ-চ্যাঁ করে শুধু ডাকছিলো মাকে-
মা নিতে পারছে না তুলে ছানাটাকে||
“আহহারে....! দুষ্টরা যদি ওকে পায়,
নির্ঘাত মেরে দেবে! কী করি উপায়?
দিতে হবে ওকে ওর বাসাটায় তুলে-
তারপরই সোজা চলে যাবো ইশকুলে||”
হরিনাথ ঘড়ি দেখে, সময় আছে ঢের!
দুমিনিটে যাওয়া যায়,তাড়া কেন ফের!
বই-খাতা নীচে রেখে ছানাটাকে ধরে,
খুব সাবধানে সে গাছটাতে চড়ে!
তারপর ছানাটাকে বাসাটায় রেখে-
নেমে আসে হরিনাথ বটগাছ থেকে ||
বইগুলো সজোরে চেপে ধরে বুকে-
হরিনাথ ছুটছে যে... ইশকুল মুখে!
তাজ্জব বনে গেলো গেট পার হয়ে!
ইশকুল নিঝ্ঝুম...ক্লাশ গেছে বয়ে।
স্যার তাকে সুধালো-“কটা বাজে বল?”
হরিনাথ ঘড়ি দেখে- দুই চোখে জল||