তিমির তমসার ভেদিয়া কপাট ছুঁইয়া দিলো বদন,
ধূসর প্রহরের ঊষার আনিয়া রাঙিয়া উঠিল গগন।
নব নুর আসিল গবাক্ষ ফুঁড়ি গিয়াছে খুলিয়া দোর,
তন্দ্রা টুটিয়া উঠিলো জাগিয়া অবচেতনার ভোর।
উঠুনের কিনারে দুলিতেছে ওই বনতমালের শাখ,
কর্ণগোচরে আসিয়াছে ওই কোকিলের কুহুডাক।
আঙিনার অদুরে টলটলাইয়া বারিতে ভরিল ঝিল,
ঝিল জলে ওই জলকেলিতে মরালী হইলো মিল।
ঊষার দুয়ারে ওই তপ্ত রবি নিত্য করিলো ভীর,
বাঁশরী বাজায় যমুনা পুলিনে মরমে আসিয়া ধীর।
কুঠিরে ঘিরিয়া শিরিষ শিমুল, যুতি মুল্লিকা ফুটে,
বনভূমি ভেদী কোকিলে কুহু কূজন ফুটিয়া ওঠে।
করিলো আকুল আমারি পরাণ মাধবী কুঞ্জবন,
বাজিছে বাঁশী গোটের রাখালে ব্যাকুল বৃন্দাবন।
লাঙ্গল কাঁধে মাথাল মাথায় জোয়াল লয়ে চাষা,
ওইদেখি কোন হিম চরণে রূপের আলোয় হাসা।
মুক্ত দানায় নব তরুদল উঠিলো ক্ষণিকে সাজি,
নদী নির্ঝর কাঁদে ঝরঝর তরণী বাহিতে মাঝি।
খেয়া ঘাটের পর হাট পশরায় মিলিতো নর-নারী,
মাঠ পেরোলেই মাঠ দেখা যায় মাঠের সারিসারি।