আদালত হতে আসিল নোটিশ বিচারপতির হাতে,
চলে না কাজীর বিচারকার্য করুণ অসুখের ঘাতে।
করিছে আদেশ ক্ষিপ্রগতির জনতা ভোগীছে ঢের,
প্রেরিত উত্তরে বলিল খলিফা নব বিচারক ফের।
নিযুক্ত কাজীর আরম্ভ ধারা, কয়েদি বৃদ্ধা নারী,
ভোজনশালার রুটি চুরি দায় বিচার করিবে তারি।
কাজীর জবাবে কহিল বৃদ্ধা রহিয়াছে সত্য যত,
কহিল কাজী চুরি মহাপাপ এই কাজে কেন রত?
উত্তরে বৃদ্ধার উপবাসে তাহার অঢেল বহিছে দুখ,
অসহায় অনাথ নাতি দুখানার চুপসে গিয়াছে মুখ।
ক্ষুধার্তে কাতর করুণ চাহনির সহন হয়নি মোর,
নাহি পাই উপায় মেটাতে ক্ষুধা করিয়াছি হে চোর।
দেখে চারিপাশ কহিল কাজী কালকে হইবে রায়,
রহিয়াছে যতো গন্যমান্য আদালতে যেন হয় ঠাঁই।
রহিল হাজির নিশ্চল দেহে কাজীর জ্ঞাপন শোনে,
চুরি প্রমাণের অর্থদন্ড, কুড়ি বেত গোনে গোনে।
ভুগিতে হইবে বছর খানিক গারদের পরিতাপ,
সত্যতা যখন করিল স্বীকার হাত-কাটা হল মাফ।
চাবুক হাতে নিয়াছে কাজী গিয়াছে বৃদ্ধার পাশে,
কহিল বৃদ্ধা মারো হে চাবুক মমতা লুঠিয়া নাশে।
বহুকাল থেকে বিত্তশালী রহিলো ধনবান যতো,
নাহি সেবিছে দুখীরে ওরা অপরাধ কষে কতো!
যে দেশে ক্ষুধায় জনতা আজি করিতে চুরি ছুটে,
ওখানেই তাহা দোষী করিয়া আইনের ধারা ফুটে।
কহিলো কাজী খলিফা তাহার আদেশে দন্ড ধরি,
কয়েদির ঘাড়ে দন্ড হানিয়া খলিফার দ্বায় স্মরি।
ব্যথা দিয় হস্তে রুধির হেরি রশিতে বাঁধি গেলে,
দন্ডে- মন্ডে মায়া-মমতার পেছনে দিয়াছি ঠেলে।