মধ্য রজনীতে হঠাৎ বিশ্রী নষ্ট অপয়া দুর্বিষহ স্বপ্নে
মা গো তোমার করুন অসহায় মুখচিত্র ভেসে উঠলে
অবিশ্রান্ত অযাচিত নির্মল ঘুমও যায় নির্ঘুমে।
হৃদযন্ত্রে কনকনে ব্যাথায় ব্যথিত প্রণয়ে
আপন মনে কেঁদে ওঠে -
হয়তো কোন অশুভ আস্তায় তোমাকে চাপিয়ে দিয়েছি;
একটু ভালো থাকবো বলে নয়তো সুখের খোঁজে
কিংবা ভবিষ্যতের কোন মুহ্যমান স্বপ্ন বুননের প্রতীক্ষায়।
কখনো কখনো মনে হয় তোমার সুখটুকু কেড়ে নিয়েছি,
আমাকে জন্ম দেবার পূর্ব থেকেই কিংবা -
গর্ভের সুরক্ষা বলয়ে লালিত প্রসূত ক্ষণেই।
তোমার হৃদয় নীলাভ নীল রঙ্গে কানায় কানায় পূর্ণ
থাকার কথা ছিল;অথচ আজ তুমি!
অবহেলায় অযত্নে নিগড়ে নিগড়ে পতিত প্রতিহত
মাতৃত্বের প্রতিটি মর্মে মর্মে নিকৃষ্ট অকথ্য অপবাদে,
গুনতে হচ্ছে জীবন পঞ্জিকা, যাপিত হচ্ছে দুর্ধর্ষ রাত্রি
কোন প্রস্ফুটিত পূর্নিমার রাতে
ভরা চাঁদের  বিপরীতে
নিস্তব্ধ পৈশাচিক অপ্রিয় সব তিমিরে;
বৈকুণ্ঠের ভিটেয় কালকূট অপয়া কলঙ্কিত বিদ্রুপে।
মা গো ভালোবাসি ;ব্যক্ত করতে চেয়েছি বারংবার
ভালোবাসি বলতে গেলেই বসন্তের বুকে আগুন জ্বলে
মেঘের গর্জনে বিদ্যুৎতরঙ্গায়িতে পৃথিবী কেঁপে ওঠে
তছনছ হয়ে যায় কৃষ্ণচূড়ার কচি শাখা,অঙ্কুরিত আমের মুকুল
তাজা লাল গোলাপ,কৃষ্ণচূড়া, শিমুল,পলাশ কিংবা রজনীগন্ধা সফেদ; ক্ষত বিক্ষত হয়ে যায়
লাল,নীল,সাদা,বাসন্তীর বুক; অন্ধকার নামে
নীলাভের ভেতর জমাট বাঁধা কালো রক্তে।
আমি এই বিধ্বংসী বসন্ত চাই না।
আমি চাই আবার প্রিয়ংবদা ফিরুক
ঘোর বর্ষা নামুক, বন্যায় প্লাবিত হোক
কালো জমাট বাঁধা পচা বাসী গন্ধ লেগে থাকা বিমর্ষ গাঁথা
মিশে যাক স্বচ্ছ শৌধ জলকণায়,গড়িয়ে যাক মৃত্তিকায়।
আবার শরৎ নামুক, সাদা মেঘের ভেলায় বয়ে আসুক
জলপাই পাতার কুড়ে ঘর,আঙ্গিনা ভরে যাক সাদা কাশফুলে।
দূর্গা পুজোয় পাঞ্জাবি,মায়ের রঙ্গিন শাড়ি
ধনুচি নাচে ঢাকের কাঠি, পুজোয় শঙ্খ,
বেজে উঠুক সন্ধ্যা আরোতিতে উলুধ্বনি।
মায়ের হাতে রান্না, নারকেল নাড়ু,সাত ব্যঞ্জনা
পায়চারীতে পাকশালা,আবার ঘুম ভাঙ্গুক বাসন মাজার ঝনঝনানিতে; সায়াহ্নে পৌঢ় প্রাঙ্গনে, নৈশ্যভোজ হোক-
পূর্ণ মুখ দর্পনে;ঘরে ফিরুক বিক্ষুপ্ত জনতা।
গাঁথা হোক আবার গল্পের সাথে গল্প
বায়ু তরঙ্গ কল্লোলিত হোক ভাষা শব্দে
ঝলসিত জ্যোৎস্নাময়ী স্নিগ্ধ কোমল নিশিথে।
ফিরে আসুক চেতনারূপ জীবনানন্দের সোনালি চিল
আবার একটা ভোর আসুক
সূর্য স্নান হোক আবার প্রভাতী গঙ্গায়।

সাঞ্জু
দর্শন বিভাগ
(৩য় বর্ষ)
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়