খুব বেশি তোমার উপস্থিতির প্রয়োজনবোধ করি
কতটুকু প্রিয়জন হয়েছি‌ জানি না,
কখনো তোমাকে জিজ্ঞেসও করিনি, কি লাভ তাতে?
শুধু শুধু তোমাকে বিরক্ত করা,
কষ্টের বীজ বোনা নিজ হাতে!
তোমাকে দেখার অপেক্ষায় নিষ্পল দুটি চোখ
মৃত্যুর অপেক্ষায়, পানে পূর্ণ পেয়ালার হেমলক!

যে অনল হৃদয় পোড়ায়
সে অনলই হৃদয় জুড়ায়,
তুমি ঘরপোড়া গরুর মতো সিঁদুরে মেঘ দেখে পালাচ্ছ,
আমি হৃদয় জুড়ানো মলম নিয়ে তোমার পিছু দৌড়াচ্ছি,
পুনরায় হৃদয় পোড়ার ভয়ে তুমি দৌড়াচ্ছ..! দৌড়াচ্ছ..! দৌড়াচ্ছ..!
আমিও তোমার পিছু পিছু দৌড়াচ্ছি......
এভাবে তোমার পিছু দৌড়াতে দৌড়াতে
আমি পৌঁছে যাচ্ছি মৃত হৃদয়পুরীতে।


আমি বিষবৃক্ষের বীজ চিবিয়ে অপলক চেয়ে আছি
কাকভেজা হয়ে বসে আছি তোমার হৃদয় আঙিনায়,
তুমি দরজাটা খুললে না
জানালাটাও বন্ধ করে দিলে;
হৃদয় জুড়ানো মলমী হৃদয় বিরহী বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছে,
ধুয়ে যাচ্ছে প্রেমের সুবাসিত নির্যাস।

আমার হৃদয় নগরে তুমি প্রিয়তম অতিথি
তোমাকে আপ্যায়ন করি প্রেমকাব্য,
অভ্যর্থনাস্বরূপ গ্রহণ করো আমার ভালোবাসা।
ভয় পেয়ো না,
এখানে কোনো লৌকিকতা নেই,
যেরূপ ঈশ্বরকে বিশ্বাস করো
সেরূপ ভালোবাসাকে বিশ্বাস করো,
জেনো, ভালোবাসা কেবল ঈশ্বর হতেই আগত।

জানি ঘরপোড়া গরুর 'ভয়' কোনদিন কাটে না
তাই ঘরে ঢুকতে তার ঘর পোড়ার ভয়,
বাইরে তুমুল বিরহী বৃষ্টির অবিরামনামা!  
ভেতরে খিল আটকে দাঁড়িয়ে আছে অপরাধবোধ;
তুমি অতীতকে বিদায় জানাতে আগুপিছু হচ্ছ
ফাল্গুনের ঝরাপাতার ডাল ধরতে দ্বিধায় ভুগছ,
ওদিকে বসন্তের ডালা সাজিয়ে অপেক্ষায় আমি!

নতুন কুঁড়ির অপেক্ষায় তুমি অমতে অটল
আমি শেকড়সুদ্ধ আগাগোড়া জীবন্ত,
তুমি ডাল ভাঙার ভয়ে মরা গাছে বসে আছ
আমার প্রতি তোমার কেবল অবিশ্বাস বাড়ে!
বিশ্বাস করো নিজের মনগড়া ভুল মতবাদকে।

অদৃশ্যের প্রতি যে বিশ্বাস মনে
সে বিশ্বাস দৃশ্যের প্রতিও নেই,
তবুও দৃশ্যের মাঝে অদৃশ্যকে খুঁজি
অদৃশ্যকে অনুমান করে দৃশ্যকেই পূজি।

যাচাইবিহীন বিচারের ক্ষেত্রে
সাক্ষীদাতার প্রমাণপত্রও অগ্রহণযোগ্য!
বিরোধী মতবাদ প্রাধান্যের অভাবে
মিথ্যার পোশাক পরে সত্যকে দাঁড়াতে হয় মৃত্যুর কাঠগড়ায়।

ইতঃমধ্যে তুমি অবশ্য মধ্যম আশ্রয় নিয়েছ
বিবেকের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আছি আমি,
বিচারের রায় বাদীর বিপক্ষে গেলে
আসামির বেকসুর খালাস হয়,
খাঁটি প্রেমিকও হয় ব্যর্থ প্রেমিক।
আমরা নিজস্ব মতবাদে দু'জনই খাঁটি প্রেমিক
তবুও আমাদের মাঝে নেই প্রেমের চিহ্ন
দু'জনের ‌ঈশ্বর এক তবুও চাওয়াটা ভিন্ন।

আমরা সঠিক সময়ে ভুল কাউকে চেয়েছি
অথবা ভুল সময়ে সঠিক কাউকে হারিয়েছি,
তাই দু'জনেই দুঃসময়ে উপনীত হয়েছি!
অথচ অপেক্ষায় থাকা অভিভাবক চোখ
অভিযোগের দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমাদের চোখে,
আমাদের চোখ থেকে তাদের চোখ সরলেই
আমরা দু'জন দু'জনের চোখে চোখ রাখব,
তারপর দু'জন দু'জনের ভালোবাসার প্রয়োজনে
দু'জনই হয়ে উঠব দু'জনের প্রিয়জন।