তোরে আমি দেখছি, মিষ্টি রোধে ভিজা চুলে,
পরাণডা আমার ধুক-ধুক করে, তখন কৈশোরে কাচা বয়স,
আম তলাতে দাঁড়িয়ে রইছি, বন্ধু রে লইয়া
মুচকি মুচকি হাসছ তুই, মনডা লইছোস কারিয়া,
পিরিতির জলে জ্বলে আগুন, জলাশয় পুনামাছের ঝাঁক,
শুধু দেখছি আমি তোর অবাগ করা রাগ,
রাইতের আন্দারে, বিদুৎের আলোয় দেখছি তোরে,
আচমকা গতিতে দৌড়ে আসছো মোর ধারে,
তোর কথা শুনবার লাইগা, কত অপেক্ষা করি!
তুই তো আমার আঁধার ঘরের পূর্ণিমা রাইতের পরী।
চান্দের লাহান মুখটা তোর, দেহে জুইড়া বকুলের ঘ্রাণ,
মনডা তোর শীতের রইতে ভাপাপিঠার আভার মতই অত্যন্ত নির্মল,
বুকের মাঝে ধুক ধুক শব্দে মুখে নেই কথা,
তোর জন্যই লিখে দিতাম বন্দর-শহর গ্রামের মাথা,
চালতার আচার খুব প্রিয় তোর,
আমের ভর্তা, হুরুম মাখা,
সখের খেলা গুলাছুট্ট,
দাড়িবান্ধা খেলি, দু’জনে মিলে তালে,
কপাল টুকা মারি,
ছেমরিরে তুই জীবন ভর অন্য দলেই রইলি পরি।
বৈশাখে ধান পাকে পাকে আরো জাম,
তুই ক্যান লুকিয়ে ছিলি,
খড়ের মাচার আড়ালে যখন আমার হাত ভর্তি জাম,
আমার ঘরের মাঝে ঘর থাহে না
মনের মধ্যে মন,
কার্তিক মাসের হাল্কা কুয়াশায় লুকিয়ে থাহিস ক্যান,
শিশির ভেজা ঘাসে, সহাল বেলা হাঁটি,
চিনাজোগ রক্ত খাচ্ছে, মশায় বলছে যা বাড়ি,
তুই বলছি,
জনমভর তোর সাথি আড়ি আড়ি।
এখন তো আর দিন কাটে না কাটে না রাইত,
মনের সাথে করতে হচ্ছে দিন-দুনিয়ার ফাইট।
কহন হয় সহাল কখন হয় রাইত ,
খাইতে আমার ভাল্লাগে না,
না খাইলি যদি মরি,
মন্দের ভালো সন্ধি করি
তোরে ছাড়ি তোরেই ধরি,
তুই আমার পূর্ণিমা রাইতের পরী।