আবার যদি দেখা হয় তোমার আমার-
হঠাৎ কুঁড়ি কিংবা ত্রিশ বছর পর,
সান বাঁধানো পুকুর ঘাটে স্নিগ্ধ বিকেলে,
কিংবা গোধূলি লগ্নে ঠিক অন্ধকার আচ্ছন্ন মুহূর্তে,
গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে চারিধারে,
ছুঁয়ে দিয়ে যাচ্ছে, স্নিগ্ধময় কোমলতায়।
শরৎের মেঘে মেঘে ঝুম বৃষ্টিতে দু’জনেই
ভিজে একাকার হৃদয়ে নামে বসন্ত,
আঁখি প্রাণের প্রদীপ জ্বলে ছল্ ছল্ জলে
আবার যদি দেখা হয় তোমার-আমার,
কুড়ি কিংবা ত্রিশ বছর পর।
হেমন্তের শিশির ভেজা ঘাস আর হালকা কুয়াশায়,
যদি দেখা হয় তোমার সঙ্গে, ক্রমেই ধরণী উত্তপ্ত
মল্লিকা, শিউলি, কামিনী, ছাতিম ফুলের ঘ্রাণে,
তুমি হাত বুলিয়ে দিবে, আমার চুলে,
আবার যদি দেখা হয় তোমার আমার-
হঠাৎ কুঁড়ি কিংবা ত্রিশ বছর পর।
আবার যদি দেখা হয়, বসন্তের পরন্তবেলায়,
এলোমেলো বাতাস কিন্তু স্থির থাকে না মন,
কোকিলের কণ্ঠে কুহুতান আর বউ কথা কও পাখির শিস,
হৃদয় অভ্যন্তরে টান-টান উত্তেজনা আর উন্মত্ততা,
-তোমার- আমার!
কুড়ি কিংবা ত্রিশ বছর পর।
আবার যদি দেখা হয়, ঝুম বৃষ্টিতে তুমি দাড়িয়ে ছাতা-
হাতে অপেক্ষায়,
তখনই!
মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্র স্বস্তি মিলে
যদি আবার দেখা হয়, কাদা মারিয়ে পথের ধারে,
ইস! মেঘের গর্জন ও ঝড়ো বাতাসে,
কুড়ি কিংবা ত্রিশ বছর পর।
আবার যদি দেখা হয়, স্নিগ্ধময় শীতের প্রভাতে,
ঝিলমিল রবির কিরণে মৃদু হাওয়ায় তুমি-আমি
বসে মুড়ি ও খেজুরে সু-মিষ্টি রস খেতে পারি-
আবার যদি দেখা হয়, কুড়ি কিংবা ত্রিশ বছর পর।
আবার যদি দেখা হয়, বর্ষার মাতুল চারি ধারে
তুমি-আমি ডিঙ্গি নৌকায় পাল তুলবো মনের
আনন্দে নদী থেকে সমুদ্রে, যৌবন ভড়া কোনো গাঙ্গে
রঙ্গে কাটবে দীঘল বেলা, অসময় করো নাগো অবহেলা,
আবার যদি দেখা হয়, কুড়ি কিংবা ত্রিশ বছর পর।
আবার যদি দেখা হয়, বাসে ট্রেনে নয় তো হুট তুলা রিক্সায়
অন্য কোনো শহরে তোমার গন্তব্যে আমি আছি দাড়িয়ে,
মৃদু হাওয়ায় বা সূর্যের রশ্মি তোমার মুখে মায়া,
হাত বাড়িয়ে আমি হব ছায়া,
কুঁড়ি কিংবা ত্রিশ বছর পর।
যদি দেখা হয় চৈত্রের দুপুরে, হৃদয় ও হৃৎপিণ্ডের তাপদাহ,
বৈশাখের ঝড় হাওয়ায়, আমের মুকুলে র মৌ মৌ গন্ধে,
তেপান্তরের বৈশাখী মেলা আর অন্তরের জ্বালা লয়ে
আবার যদি দেখা হয়, কুঁড়ি কিংবা ত্রিশ বছর পর।
তোমার আর আমার!
তোমার আর আমার!
কুঁড়ি কিংবা ত্রিশ বছর পর।