রেললাইনের পাশের এই যে তুঁত গাছটি
এটি কেমন জানি শ্বাস নিতে পারছে না
অথচ এই জায়গায় বাবা যখন
হাঁস-মুরগীর খাবার দিয়ে বসে থাকতেন  
এখানকার নিসর্গ শান্তিতে পরিপুষ্ট হতো তখন
এই তুঁত গাছটি বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতো
এখানকার সবগুলো গাছ, পত্রপল্লব, পুষ্পও  
বাবার কার্বনডাইওক্সাইডে ছিলো সতেজ  
আলো, বাতাস, মাটি বা মাটির সোঁদা গন্ধ
সবকিছুই যেন বাবাকে প্রফুল্ল চিত্তে দেখতো
বাবার যত্নে বেড়ে উঠা ভেষজ বৃক্ষ,বাড়িঘেরা কলা গাছ
আর সুপারি পাতার ছন্দে বলা যেতো
তিনি জমিতে চাষ করতে গেছেন নাকি
বাড়িতে বসে জায়নামাজে ইবাদত করছেন  
এখানকার প্রকৃতি যেন বাবার প্রেমে পড়েছিল,
তাঁর নাতিশীতোষ্ণ ভালবাসায় হয়ে গিয়েছিল বাউল
ঋতুগুলো যেন তল্পিতল্পা গুছিয়ে এসছিলো  
বাবাকে কেন্দ্র করেই যেন তাদের শৃঙ্খল আবর্তন ।


বাবার  বিদায় মুহূর্তে প্রকৃতি মনের চোখ মেলে চায়নি,
একবারও তারা পেছন ফিরে তাকায়নি
এই হৃদয়বিদারক দৃশ্যের দর্শক যেন কেবল আমি
প্রকৃতির দুর্দিনে বাবাই ছিলেন একমাত্র ভরসা,
আমি যখন বাড়ির চারিদিকে তাকাই
তুঁত গাছটি যেন বলে উঠে তোমার বাবা কোথায়?
প্রকৃতিও সমস্বরে চিল্লায়ে উঠে তোমার বাবা কোথায়?
আমি কি করে উত্তর দেব!
শুধু বুকের বামপাশে ভূমিকম্পের মতো ঝাঁকি দিয়ে উঠে
দেই অশ্রু বিসর্জন
বুঝি বাবা যেন শান্তির অপর নাম,
মৃত্য যেন দীর্ঘশ্বাসের নাম!
ছাই চাপা বিষাদসিন্ধুর নাম।