জীবন সমরে রণক্লান্ত এক সৈনিক আমি।
কোনো এক পড়ন্ত বিকেলে-
অংশুমালী যখন পশ্চিম দিগন্তে বিলিন হবার অপেক্ষায়,
রূপসজ্জার দর্পনে দেখছিলাম নিজেকে আপাদমস্তক,
স্বপ্নঘেরা আখিঁর নীচে ঈষৎ ভাঁজ, মাথায় পাকা চুল,
ইটচাপা ঘাসের মতো বিবর্ণ সারা শরীর।
যৌবনের সেই উম্মাদনা আর নেই,
বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছে শরীর।
যুদ্ধে বিধ্বস্ত ট্যাংকের মতো যেনো এখন
পৃথিবীর কোনো প্রান্তে অকেজো পড়ে থাকা।
আমি শুধু একা নই-
যৌবনের জীবনসাথী, অমৃত অপ্সরী,
যার ঠোঁটে ছিল উর্ব্বশীর হাসি, পলকে চঞ্চলতা,
অঙ্গের প্রতিটি ভাঁজে ছিল সীমাহীন কল্লোল,
শৌখিন সজ্জাময় কান্তি, লজ্জারুণ অবয়ব,
দেখামাত্র তীব্র প্রেমের স্ফুরণ ঘটত।
আজ তার হাসি মলিন, বাধানো দাঁত, চোখে চশমা,
ঝলসানো ত্বক, তলপেটে মেদ, অঙ্গের ভাঁজ কুঁচকানো।
টোলপড়া কপোলে এখন একখন্ড মাংসপিন্ড ঝুলে আছে।
ধরনী যেন অবজ্ঞা ভরে বলছে - ‘তোদের আর প্রয়োজন নাই!’
জীবনের দ্বারপ্রান্তে গোধূলিবেলার স্থিতি।
ক্লান্তপদে অস্তগামী সূর্যের মতো মৃত্যুর দিকে এগিয়ে চলা।
মৃত্যু যেনো সবকিছু তছনছ করে দেবে।
তনুতে মর্মর ধ্বনি বাজে গোপনে,
চিরন্তন মৃত্যুকে শিয়রে রেখে রাত কাটে নির্ঘুম।
রূপসীরা আর রূপের পসরা সাজিয়ে থাকেবে না,
ঝরে পড়বে সাজানো কাননের প্রস্ফুটিত পুষ্প।
থেমে যাবে প্রাণের স্পন্দন,
বিবর্ণ হবে সবুজের সমারোহ।