হে আয়না!
তোমাতে দেখি আমার অবয়ব
আর ভাবি-
আমার আমিকে চিনেছি তোমার মাঝে।
আমি দেখতে কেমন?
কোথায় আমার ত্রুটি?
চোখের পাতা, ভ্রু-যুগল, নাসিকার গড়ন,
আঁচিল কিংবা তিল, গাত্রবর্ণ, চুলের রঙ-
সব দেখেছি তোমার মধ্যে।
হে আয়না!
প্রাচীন গ্রীসের ডাইনীরা প্রথম শিখেছিল তোমার ব্যবহার।
রোমের ধর্মগুরুরা দেখত অতীত, বর্তমান আর ভবিষ্যৎ।
চীনারা আয়নাতে ধরে রাখত চাঁদের স্বর্গীয় শক্তিকে।
বৃটেনের বিশ্বাস-মৃত ব্যক্তির আত্মা আটকা পড়ে আয়নায়।
তোমার মধ্যেই নিজেকে খুঁজে পাই,
নিজের সৌন্দর্য যাচাই করি অবিরত।
প্রতিদিন একবার হলেও তোমাতে নিজের মুখ দেখি।
রাগে-দুঃখে, সুখের আবেশে, গভীর চিন্তায়
কিংবা বিষন্নতায় যখন বিবর্ণ হই-
কেমন হয় আমার মুখাবয়ব!
তোমাতে দেখি সুখের আবেশানন্দ, ক্রোধের অগ্নিশিখা
দেখি শোকের গ্লানিছায়ার প্রতিচ্ছবি।
তৃপ্তির প্রশান্তিতে মুখমন্ডলের প্রকৃতি,
হতাশার কালোছায়া, আশার স্বপ্নময় কান্তি,
ভালোবাসার রঙিন প্রজাপতিসম চাঁদমুখ।
বিদ্রোহের রক্তচক্ষুকে দেখি,
ক্ষোভে কিংবা অপমানের জ্বালায়
পরিবর্তনের প্রতিচ্ছবি দেখি।
শিশু বয়সের কচি তুলতুলে মুখ,
দুরন্ত কৈশোরের উম্মাদনা,
যৌবনের সতেজ প্রফুল্লতা,
প্রৌঢ়ত্বে নিস্তেজ বয়সের ছাপ,
সবকিছুই তোমাতে প্রতিফলিত হতে দেখি।