উঠানে কৃষ্ণচূড়া ফুটে আছে ডালে,কটুম পাখি ডাকে সন্ধ্যায়
এবার ছুটিতে খোকা ফিরবে ঘরে;
তোড়জোড় দিন কেটে গেছে মায়ের-
গ্রীষ্ম দিনের ব্যস্ততায়।
গতরাতের শিলাঘাতে ফসলিমাঠ বিধ্বস্ত
কৃষক পিতার ঘন দীর্ঘশ্বাস,ভবিষ্যৎ চিন্তায় ত্রস্ত;
খোকার মাইনে,আবার আসছে বানের মৌরসুম-
কিভাবে যে চলবে দিন
এদিকে মহাজনের কাছেও জমা পড়ে আছে বেশকিছু ঋণ।
খেতের আলে হত্যে দিয়ে বসা বিমর্ষ মুখটায় প্রশান্তির ছায়া ফোটে,
আর তো একটি বছর মাত্র-
নুনে ভাতে,অভাব অনটনে,ঠিক চলে যাবে যা জোটে।
তারপর,খোকা পাশ দিবে,একটা চাকরি...
চাকরি!
মন্দার বাজারে চাকরি!
চাষাদের তো কোনো কোটা নেই,
তবে কি হবে?
হাফরের মতো বুক ওঠা নামা করে কৃষক পিতার;
দিগন্ত হতে দৈবাৎ ভেসে আসে রূঢ় কণ্ঠস্বর-
"চাষাদের কোনো কোটা নেই"
শুনে কালো কৃষকের শরীরে ঘাম ঝরে দরদর।
লু হাওয়া বয়ে চলে ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের জমিনে
উপরে ঐ উদার আকাশ অগ্নিবর্ষণ হানে অকৃপণ
হঠাৎ কাল ছায়া নেমে আসে নীলাক্ষার নীলে
উঠানে কুটুমপাখি ডাকে,
কে আসছে?
কেউ আসছে,
নিশ্চয়ই আজ শুভক্ষণ!
আগল খুলে দাঁড়িয়ে থাকে মা
মা জানে না,এবার একেবারে ফিরছে তার খোকা-
খোকারা যে কতটা মৃত্যু পাগল।
জয় আমাদের হবেই দেখো মা-
এ রক্ত বৃথা যাবার নয় বন্ধু,শোকের সিন্ধু আজ উত্তাল
আমাদের প্রশস্ত বুকের ছাতি দুর্ভেদ্য ঢাল-
ওইখানে এসে ঠেকে যায় কাল মহাকাল!
তারুণ্যের রক্ত আলপনা আঁকা রাজপথে আসে নয়া নয়া অভ্যুত্থান;
আবার বাংলাদেশ জাগে,
জনতার ঘরে ওঠে রক্তে রঙিন ধান!