অমর একুশের রাত্রি দ্বিপ্রহর
গন্তব্য শহীদ মিনার চত্বর,
হঠাৎ দূর থেকে
মিছিলের প্রতিধ্বনি শুনতে পাই,
রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই
রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই।
একশ চুয়াল্লিশ ধারা
মানি না মানবো না!
পুলিশের জুলুম বন্ধ করো
করতে হবে।
হঠাৎ নিস্তব্ধতা...
চারিদিক নিশ্চুপ হয়ে গেলো নিমেষেই,
আমার সামনে অর্ধশতাধিক অবয়ব!
আমি বিস্মিত নয়নে তাকিয়ে রইলাম
ভয়ে কুঁকড়ে মুকরে একাকার
ভীতু কণ্ঠে বললাম কে তোমরা?
আমার পথ রুদ্ধ করছো কেনো?
তারা শুধালো,
আমরাই রফিক,শফিক,জব্বার
বরকত,সালাম, ওহিউল্লাহ,
আরও অনেকেই রয়েছেন এখানে
ভাষাশহীদের নাম না জানা সত্ত্ব,
অনেকেই এরা গুম হয়ে যাওয়া
বেওয়ারিশ লাশের পুত-পবিত্র আত্ত্বা।
সেদিন শাহবাগ হতে রমনার বটমূল
রৌদ্রদগ্ধ কৃষ্ণচূড়া গাছের তলায়
ঢাকা মেডিকেল, বংশাল মোড়ে
কিছু জনতা আন্দোলনের ভিড়ে
পাক পুলিশের নিক্ষিপ্ত বুলেটে
তারা লুটিয়ে পরেছিল,
নিমেষেই রক্তস্রোতে ভিজে যায় মাটি
তাদেরকে টেনে হিচরে নেয়া হয়েছিল
ঢাকা মেডিকেলের মর্গে,
সেখানেও তাদের নিস্তার মেলেনি
অতঃপর তাদেরকে গুম করে
গর্তে গাদাগাদি করে মাটিচাপা দেয়।
তারাই আজ আমার সামনে দন্ডায়মান!
একটা প্রশ্ন আজও রয়ে গেছে?
তারা যে ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে
আমার কি করছি তার শুদ্ধ ব্যবহার,
ভাষাকে যথাযথ সম্মান দিলেই তবে
শহীদদের জন্য হবে শ্রেষ্ঠ উপহার।