জন্ম যেখানে সবসময়ই আজন্ম পাপ
সেখানে কিসের দুঃখ, কিসের পরিতাপ!
বিদ্যা যেখানে লাঠির ডগায় সদা বিচ্ছুরিত
জ্ঞানের বিকাশ সেখান বাঁধা পাবে অবিরত।
স্বেচ্ছায় বিদ্যা লাভ কভু যদি মনে স্থান না পায়
এমন বিদ্যায় কি আর কোনভাবে অন্ধকার দূর হয়!
সনদ লাভের উচচ শিক্ষায় চাকরি পাওয়ার সাধ
মনোবৃত্তির বিকলজ্ঞতায় পরাধীনতার অবসাধ।
নষ্ট হয়েছে সুকুমার বৃত্তি, মানবিকতার মসিবৎ
অধমের হাতে বিদ্যার ছড়ি ঘুরছে বহাল তবিয়ত।
আনুগত্যে মেলে চাকরি বাকরি, মাস্টার মহাশয়
নিম্ন শিক্ষার ধ্বজাধারীর প্রতাপে জ্ঞানের মহাপ্রলয়।
সূচনা যখন নষ্ট ভোমরার হাতে, সমাপনান্তে রবে কি?
বিদ্যার শেকড়ে মড়কের আলামত রোজ বিস্ময়ে দেখছি।
দেয়ালের লিখন দেয়ালে ছিল, মনে লাগানো ছিল তালা
দুষ্টের পাল্লায় শিষ্টাচার লঙ্ঘনে পুলকিত বিদ্যাদেবী অবলা।
পচন লেগেছে উন্নত শীরে, চারিদিকে অবনতির ঘনঘটা
বিদ্যাঙ্গনে অসূরের বসেছে মেলা, তপ্ত অপরাহ্ণে কুজ্ঝটিকা।
রাজনীতির রঙ্গশালার কুশীলবেরা সর্বত্র সহাস্যে সমাসীন
শিক্ষাকে শনির বলয়ে ঘুরানোর এযেন প্রহসন সীমাহীন।
দ্বিতীয় শ্রেণির দেবদূতের সযত্নে তৃতীয় শ্রেণীর অপদেবতা
ভাড়ে ভবানী মাকাল ফলে বিদ্যাপীঠের সর্বত্রই অচলাবস্থা।
তবুও নাকি উন্নয়নের জোয়ারে ভেসে চলেছে সারা দেশ
উলুখাগড়ার দিনাতিপাতে লাট সাহেবেরাই আছে বেশ।
গরীব কাঙালদের পেটে লাথি মারার নাটক হচ্ছে মঞ্চস্থ
নীচকুলে বেড়ে ওঠা শাহজাদাদের হাতে হতে হয় অপদস্থ।
উত্তরাধুনিক বাংলা নবাবদের দখলে ক্ষমতার ঘুরে ছড়ি
পদ পদবী সব বাগিয়ে নিয়ে সহাস্যে বাজিয়ে যাচ্ছে তুড়ি।
নয়া জামানার সমাজ কাঠামোতে তিরোধিত হয়েছে সাম্য
পদে পদে বেড়েছে অসন্তোষ, জনজীবনে পুঞ্জীভূত বৈষম্য।
সনদধারী শিক্ষিত সমাজ খুঁজে বেড়ায় অর্থবিত্তের স্বাদ
অসম প্রতিযোগিতার চাকরির বাজারে জ্ঞান চর্চায় অবসাদ।
অন্ধকার সে তো ঘুটঘুটে ছিল, তাতে লেগেছে আরো কালো
সৎ লোকেরা অসৎ হয়ে যায়, খারাপ হয়ে যায় ভালো।
কান টানলে যদি মাথা আসে, ধর্ম টানলে সাম্প্রদায়িকতা
কলুষিত হৃদয়ের বিষবাস্পে সমূলে বিনষ্ট মৌলিকতা।
২১ জুন ২০২২, রংপুর।